নটর ডেম কলেজ স্টাফ লিপিকা গোমেজের বাসায় চুরি করতে আসেন দুই যুবক। তারা পূর্বপরিচিত হওয়ায় তাদের চিনি ফেলেন লিপিকা। ফলে মাথায় আঘাত করে ও বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয় তাকে। এ ঘটনায় জুয়েল (২১) এবং নজরুলকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১০ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকার সূত্রাপুরে নিজ বাসায় খুন হন লিপিকা গোমেজ।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ডিআইজি (পশ্চিমাঞ্চল) মো. সায়েদুর রহমান।
মো. সায়েদুর রহমান বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা নটর ডেম কলেজের স্টাফ লিপিকা গোমেজ সূত্রাপুর থানাধীন ৭৫ নম্বর ঋষিকেশ দাস রোডের চতুর্থ তলার ভাড়া বাসায় খুন হন। তিনি ঢাকা নটর ডেম কলেজে অফিস সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন।
ডিআইজি আরও বলেন, পিবিআইয়ের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুজনই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি নোজ প্লাস, দুটি স্ক্রু ড্রাইভার এবং ভুক্তভোগীর চুরি যাওয়া বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং তদন্তে জানা যায়, জুয়েল রানা নজরুলদের বাসার মেসে খেতেন। সেখান থেকেই তাদের পরিচয় এবং ৭-৮ বছরের বন্ধুত্ব। জুয়েল রানা নজরুলকে জানান তার পাশের বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় একজন মহিলা একা থাকেন। তার স্বামী-সন্তান নেই। তার বাসায় চুরি করলে অনেক টাকা-পয়সা পাওয়া যাবে।
পরিকল্পনা মোতাবেক জুয়েল রানা তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ঘটনার তারিখ রাত আনুমানিক ১১টার দিকে নজরুলকে সঙ্গে নিয়ে তার বাসায় যান। রাত ১টায় নজরুল ছাদের ওপর দিয়ে গিয়ে রশির সাহায্যে ঝুলে ভুক্তভোগীর বাসার পেছনের ভেন্টিলেটর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। নজরুল বাসার মেইন দরজা খুলে ছাদে গিয়ে জুয়েল রানাকে ডেকে আনে। তারা একত্রে বাসায় চুরি করার সময় ভুক্তভোগী শব্দ করলে নজরুল একটি লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করেন এবং জুয়েল রানা বালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধরলে তাৎক্ষণিক তার মৃত্যু হয়।
পরে তারা ভুক্তভোগীর দুটি মোবাইল, হাত ব্যাগ নিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে জুয়েল রানার বাসায় চলে যান। সেখানে দুজনে হাত ব্যাগে থাকা ২৬৩৫০ টাকা ভাগ করে নেন। ভোরে নজরুল বাসা থেকে বের হয়ে নিজের বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে মোবাইল ফোন দুটি ৩৫০০ টাকায় শিবলু হোসেন জয়ের কাছে বিক্রি করে সেই টাকাও ভাগ করে নেন।