আওয়ামী লীগের আমলে কেউ না খেয়ে থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, “আমরা সর্বদা জনগণের পাশে আছি এবং জনগণের সেবা করাই আমাদের মূলমন্ত্র। দেশবাসীকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে যা যা প্রয়োজন আওয়ামী লীগ সরকার সবই করে যাচ্ছে। শুধু আওয়ামী লীগ সরকারই নয়, দলের নেতাকর্মীরাও জনগণের প্রয়োজনে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।”
সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেকোনো দুর্যোগে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠন জনগণের পাশে দাঁড়ানো থেকে প্রমাণিত হয় যে, দল সর্বদা জনগণের প্রতিটি দুঃখ-কষ্টে পাশে থাকে। আমাদের (আওয়ামী লীগের) নীতি হচ্ছে জনগণের দুঃখ-কষ্টে তাদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশবাসীকে একটি সুন্দর জীবন দিতে চেয়েছিলেন এবং আমরা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, এটাই হচ্ছে আমাদের নীতি। জাতির পিতা এ দেশ স্বাধীন করে গেছেন। কাজেই এ দেশের মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য। গত তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করতে এসে প্রতি নির্বাচনেই তার দল সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। আর সেজন্য আজকে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধে চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছে।”
জাতির পিতার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই ৭ মার্চের ভাষণ আজ আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান নিষিদ্ধ ছিল তাকে আমরা আজকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ফিরে পেয়েছি এবং বাংলাদেশ আজকে আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি মানুষের আর্থসামাজিক পরিবর্তন হচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত আমরা পারি মানুষের জন্য দু’বেলা দু-মুঠো খাবারের ব্যবস্থা আমরা করতে পেরেছি। আর জাতির পিতা শেখ মুজিবের বাংলায় কোনো মানুষ আর ভূমিহীন-ঘরহীন-ঠিকানাবিহীন থাকবে না। আমরা ঘর করে দিচ্ছি। পাশাপাশি, সাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ থেকে ৭৫ দশমিক ২ ভাগে উন্নীত করা, মানুষের আয়ুষ্কাল ৬৪ বছর থেকে ৭৩ বছরে উন্নীত করা, খাদ্যের সঙ্গে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করণ, ১৮ হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানসহ চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এবং করোনা ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় বিতরণ করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “১৫ টাকায় চাল ক্রয়, মধ্যবিত্তের জন্য টিসিবির বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে চাল ক্রয়ের সুবিধা, ভিজিডি-ভিজিএফ এর মাধ্যমে একেবারে হতদরিদ্রদের খাদ্য সাহায্য প্রদান, বয়স্ক ভাতা, বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতাসহ নানা ধরনের ভাতা বর্ধিত হারে প্রদান করছে, যাতে মানুষের কোনো কষ্ট না হয়।”
তিনি আরও বলেন, “অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করা এবং প্রথমে লেবাস পড়ে ক্ষমতা যাওয়া, রাজনীতিকে গালি দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, আবার সেই লেবাস খুলে নিজেরাই রাজনীতিবিদ হয়ে যাওয়া। আর ক্ষমতা উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দখল গঠন করার কালচারটাই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। অবৈধ দখলকারীদের হাতে তৈরি করা যে সংগঠন তারা নাকি গণতন্ত্র চায়। যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি। যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটেডের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র দেয়নি, তারা গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা লড়াই করে। ওদের জিজ্ঞেস করতে হয়, তাদের জন্মটা কোথায়? অবৈধ দখলদারি এটা তো আমাদের কথা না। আমাদের উচ্চ আদালত বলে দিয়েছে যে, জিয়া-এরশাদ সম্পূর্ণ অবৈধ। তারপর তারাও নাকি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামও করে।”