• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অবরোধের প্রভাব নেই সড়কে, যান চলাচল স্বাভাবিক


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩, ০১:২৭ পিএম
অবরোধের প্রভাব নেই সড়কে, যান চলাচল স্বাভাবিক
সড়কে সিগন্যালে আটকে আছে গণপরিবহন। ছবি : সংগৃহীত

তিন দিন ভোট বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের প্রচারণার পর সারা দেশে অবরোধ পালন করছে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী দলগুলো দ্বাদশ দফার এ অবরোধ ডেকেছে।

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে অবরোধ শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত চলবে।

কর্মসূচি সফল করতে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো দেশের প্রতিটি জেলায় তাদের নেতাকর্মীদের সক্রিয় থাকার বার্তা দিলেও রাজধানীতে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই সব গণপরিবহন চলতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খুলছে দোকানপাটও। শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য।

সকালে সরেজমিনে রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, সাইন্সল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা ও সড়ক ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ডগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের মতোই মানুষজনের উপস্থিতি রয়েছে। আর গণপরিবহন চলাচলের হারও স্বাভাবিক। এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, স্টাফ বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এবং রিকশার উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। এসব এলাকার দোকানপাট, মার্কেট খোলার ক্ষেত্রেও শুরু হয়েছে কার্যক্রম। স্বাভাবিক সময়ের মতোই ব্যস্ত সময় পার করছেন সড়কে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ সদস্যরা।

সাইন্সল্যাবরেটরি মোড়ে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা জানান, অবরোধের কোনো প্রভাব সড়কে নেই। সকাল থেকেই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তারা যথারীতি দায়িত্ব পালন করছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দিনের মতোই গাড়ির সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও জানান তারা।

ঢাকা জেলার বাইরে থেকে যেসব বাস, মিনিবাস ভেতরে প্রবেশ করে সেসব বাসের উপস্থিতিও স্বাভাবিক। সাভার থেকে ছেড়ে আসা মৌমিতা পরিবহনের বাস চালকের সহকারী আব্দুল আউয়াল বলেন, “রাস্তাঘাট ফাঁকা। বেশ কয়েক জায়গায় যানজটেও পড়তে হয়েছে। রাস্তায় কোনো সমস্যা হয়নি।”

স্থানীয় রিকশাচালকরাও বললেন, সকাল থেকেই পর্যাপ্ত সংখ্যক যাত্রীর দেখা পাচ্ছেন তারা।

আব্দুল ওয়াহিদ নামের এক রিকশাচালক বলেন, “অবরোধের শুরুর দিকে যাত্রীর সংখ্যা কম থাকলেও এখন আর তেমনটি নেই। তবে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সকালে যাত্রীর কিছুটা চাপ কম। অফিস আদালতে যাওয়ার জন্য মানুষ যথারীতি বের হচ্ছেন এবং আমরা যাত্রী পাচ্ছি।”

তবে বরাবরের মতোই সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সংশ্লিষ্ট থানা এবং ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের অবস্থান দেখা গেছে। পাশাপাশি থানা পুলিশকে গাড়ি নিয়েও টহল দিতে দেখা যায়।

নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশনস) অর্পিত হালদার ঠাকুর বলেন, “আমাদের আওতাধীন থানায় কোনো ধরনের কর্মসূচির খবর আমরা পাইনি। সকাল থেকেই সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে, পরিস্থিতি সুন্দর ও স্বাভাবিক রয়েছে। এরপরও কেউ যেন কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে সেজন্য আমাদের টহল টিম তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।”

তবে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা অবরোধ কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই গতকাল রাজধানীতে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে, গুলিস্তানে রজনীগন্ধা পরিবহনের বাস, মিরপুর-১৩ নম্বরে ট্রাস্ট পরিবহনের বাস ও কলাবাগানে শিকড় পরিবহনের বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ও গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এক-দুই দিন পরপরই অবরোধ ও হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো।

সেই ধারাবাহিকতায় ভোটবর্জনে ২১ থেকে ২৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতি থেকে শনিবার) দেশব্যাপী গণসংযোগ এবং রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এতে সায় দেয় জামায়াত ও সমমনা দলগুলো। সবমিলিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে এটি বিরোধীদল গুলোর দ্বাদশ দফার অবরোধ কর্মসূচি এবং ২০ ডিসেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণার পর প্রথম দফার অবরোধ। এই কর্মসূচিতে সারা দেশব্যাপী সড়ক, রেলওয়ে ও নৌপথে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। তবে এরমধ্যে চারদফায় পাঁচ দিন হরতাল কর্মসূচিও পালন করেছে বিএনপি।

Link copied!