রাজধানী ঢাকার অন্যতম বড় সমস্যা যানজট। একটা সময় ছিল, যখন রমজান এলেই বিপাকে পড়তে হতো নগরবাসীকে। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হয়েও ঘরে ইফতার করা হতো না, যানজটের কারণে রাস্তায় বসেই করতে হতো। কিন্তু এবার চিত্র কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এ বছর রমজানে প্রথম বারের মতো উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সম্পূর্ণ মেট্রোরেল চালু হয়েছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর দুর্ভোগ কমেছে।
মেট্রোরেলে যাত্রার কারওয়ান বাজার স্টেশনে উঠছিলেন নাইমা আরা। তিনি কারওয়ান বাজারের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন। আলাপের এক পর্যায়ে সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “গত বছর রমজানে বাসে ইফতার করেছি বেশ কয়েকদিন। মেট্রোরেলে যাত্রা করতে হলে আগারগাঁও যেতে হতো। কিন্তু কারওয়ান বাজার থেকে আগারগাঁও যেতে জ্যামে (যানজট) পড়তে হতো। কিন্তু এ বছর তা নেই। কারওয়ান বাজারেই মেট্রো পাচ্ছি। তবে রমজানে সুবিধা কতটুকু পাওয়া যাচ্ছে, কয়েকদিন পরে বোঝা যাবে।”
এদিকে রমজানকে কেন্দ্রকে মেট্রো কর্তৃপক্ষ নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করেছে। এছাড়াও রোজাদার মুসল্লিদের জন্য ট্রেনের ভেতর ও বাইরে এলইডি স্ক্রিনে ইফতারের সময়সূচি প্রদর্শন করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের নতুন সময়সূচিতে, রোজায় প্রথম ১৫ দিন মেট্রোরেলের সময়সূচিতে কোনো পরিবর্তন হবে না। তবে শেষ ১৫ দিন ট্রেন চলাচলের সময় উভয় দিকে এক ঘণ্টা করে বাড়বে। অর্থাৎ মতিঝিল থেকে সর্বশেষ ট্রেন রাত ৯টা ৪০ মিনিটে এবং উত্তরা থেকে সর্বশেষ ট্রেন রাত ৯টা ২০ মিনিটে ছাড়বে।
এদিকে সময়সূচি নিয়ে যাত্রীদের প্রত্যাশা তারাবি নামাজের শেষ পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করলে বিশেষ সুবিধা পাবে অনেকেই। এছাড়াও টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ানোর কথাও বলছেন কেউ কেউ।
মেট্রোরেল ভ্রমণ শেষে ইকরামুল হক বলেন, “মেট্রোরেলের উঠার সময় যা বিপাকে পড়তে হচ্ছে। একটু কষ্ট করে উঠতে পারলেই দ্রুত আসা যায়। রমজানে গত বছর আধা ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। তারপরে যানজটে পরে আরও সময় ব্যয় করেছি। এবার তা নেই। এবার মেট্রোরেল হওয়াতে সুন্দরভাবে বাড়িতে গিয়ে ইফতার করা যাবে। অবশ্য টিকিট কাউন্টার বাড়ালে টিকিট ক্রয় করতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।”
নাজমুল হক নামের আরেক যাত্রী বলেন, “মেট্রোরেল হওয়াতে কষ্ট লাঘব হয়েছে অনেক। তবে রাত ১২টা পর্যন্ত করতে পারলে ভালো হয়। অনেকেই তখন দোকান থেকে ফিরবে, মার্কেট করে ফিরবে। এতে যাত্রীদের যাতায়াত আরও নিরাপদ হবে।”
এদিকে রোববার (১০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনে ডিএমটিসিএলের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, “ইফতারের আগে-পরে ২৫০ এমএল বোতল বহন করা যাবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই পানির বোতল বিনে ফেলতে হবে। যেখানে-সেখানে ফেলা যাবে না। ট্রেনের ভেতর ও বাইরে এলইডি স্ক্রিনে ইফতারের সময়সূচি প্রদর্শিত হবে।”