সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনার (আরএসটিপি) কাজ চলছে। মেট্রোর ছয়টি লাইন নিয়ে নতুন প্রস্তাব থাকছে আরএসটিপিতে। নতুন এলাকা যুক্ত করতে সব মেট্রো লাইনের এক্সটেনশনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে নতুন মেট্রো লাইন না করারও প্রস্তাব আসতে পারে আরএসটিপিতে।
সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (আরএসটিপি) প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, ‘মেট্রোরেলের সব কটি লাইনেরই অলটারনেটিভ চিন্তা করছি। এমআরটি লাইন-৫-এর নর্থ ও সাউথ যেগুলো হচ্ছে, সেগুলোর এক্সটেনশন (সম্প্রসারণ) হতে পারে। যেগুলো এখনো হয়নি, সেগুলোর মডিফিকেশন (পরিবর্ধন) হবে। মেট্রোতে নতুন এলাকা যুক্ত করার জন্য রুট বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এমআরটি লাইন-২ এবং লাইন-৪ এখনো হয়নি। সেগুলো নতুন এবং ভালো কোনো অ্যালাইনমেন্টে করা যায় কি না, যাতে বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে। এসব পরিকল্পনা সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি) থাকবে।’
বর্তমানে আরএসটিপির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে। এই প্রতিবেদন-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এমআরটি লাইন-৬ উত্তরা থেকে মতিঝিল কাজ অনেক আগেই শেষ। বর্তমানে ট্রেন চলছে। এটি কমলাপুর পর্যন্ত বাড়ানোর কাজ চলমান। তবে নতুন করে উত্তরা থেকে টঙ্গী এবং টঙ্গীর পরে গাজীপুর পর্যন্ত লাইন-৬-এর রুট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হতে পারে আরএসটিপিতে।
এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুট হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত। ২০২৩ সালে ৪ নভেম্বর এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এদিকে আরএসটিপিতে এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুট হেমায়েতপুর থেকে এক্সটেনশন করে নবীনগর বা বাইপাইল পর্যন্ত এবং ভাটারা থেকে জলসিঁড়ি বা ভুলতা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব থাকতে পারে।
এমআরটি লাইন-৫ সাউদার্ন রুট গাবতলী থেকে আফতাবনগর পশ্চিম পর্যন্ত ১৩.১০ কিলোমিটার পাতাল এবং আফতাবনগর সেন্টার থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত ৪.১০ কিলোমিটার উড়াল মোট ১৭.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৫টি স্টেশন (পাতাল ১১টি এবং উড়াল ৪টি) বিশিষ্ট মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং নকশা সম্পন্ন হয়েছে। বিনিয়োগ প্রকল্পের ডিপিপি (খসড়া) অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন। বর্তমানে প্রকল্পের ক্রয় নথি প্রস্তুতির কাজ চলছে। এদিকে আরএসটিপিতে এমআরটি লাইন-৫ সাউদান রুটের কোনো পরিবর্তন নাও হতে পারে। তবে এটার ফেজিং এবং প্রায়োরিটি কী হবে, সেটা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিষয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার মদনপুর পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করার জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ২০২৪ সালের ১৪ মে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে। বর্তমানে তার সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ চলছে। তবে আরএসটিপিতে লাইন-৪-এর বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের ইলেকট্রিক ট্রাকশনের সমীক্ষা প্রকল্প চলছে। এই রুটে ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন হলে এত টাকা খরচ করে আবার এমআরটি লাইনের প্রয়োজন আছে কি না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
গাবতলী থেকে মোহাম্মদপুর-নিউমার্কেট-গুলিস্তান-কমলাপুর-সাইনবোর্ড হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদর পর্যন্ত সম্ভাব্য মেইন লাইন এবং গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ব্রাঞ্চ লাইন সমন্বয়ে উড়াল ও পাতাল মিলিয়ে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-২ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা খোঁজা হচ্ছে। এদিকে আরএসটিপিতে এমআরটি লাইন-২-এর অলটারনেটিভ (বিকল্প) অ্যালাইনমেন্ট করা হয়েছে। তাতে এই লাইনটি পুরান ঢাকার দিকে যাবে অর্থাৎ বংশাল, লালবাগ ও বাবুবাজার ব্রিজ এলাকা দিয়ে যেন যায়, সেই প্রস্তাব রাখা হতে পারে আরএসটিপিতে।