ছাগল-কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা ড. মো. মতিউর রহমানের পর এবার আরেক কর্মকর্তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি হলেন এনবিআরের আয়কর ইউনিটে প্রথম সচিব (ট্যাক্সেস অ্যান্ড লিগ্যাল এনফোর্সমেন্ট) কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত মাহমুদ ফয়সালের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম।
জব্দ করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট এবং দুটি ১০ কাঠার প্লট রয়েছে। এছাড়াও আদালত তার, তার স্ত্রী এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে থাকা দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র জব্দের আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল, তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিগণের নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রয় বা মালিকানাসত্ব বদল রোধের জন্য ব্যাংক হিসাব, ব্যাংকে রক্ষিত সঞ্চয়পত্র ও নন ব্যাংকিং ফাইনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের আমানতসমূহ থেকে অর্থ উত্তোলন অবরুদ্ধ এবং স্থাবর সম্পদ জব্দের আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী টিমের সদস্য মোস্তাফিজ।
পরে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত ব্যাংক হিসাব, সঞ্চয়পত্র ফ্রিজ ও স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল তার নিজ নামে ও তার স্ত্রী আফসানা জেসমিনের নামে জলসিড়ি আবাসন প্রকল্পে মোট দুই কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে ৫ কাঠার প্লট ক্রয় করেছিলেন। অনুসন্ধান চলাকালীন জলসিড়ি আবাসন প্রকল্পের প্লট বিক্রয় করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ অপরাধলব্ধ সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছেন মর্মে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়। অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত বর্ণিত সম্পদ/সম্পত্তির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তা বেহাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আবেদনে আরও বলা হয়, অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ মানিলন্ডারিং আইনের ১৪ ধারা মতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিগণের নামে নিম্নবর্ণিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, বিক্রয় বা মালিকানাসত্ব বদল রোধের নিমিত্ত ব্যাংক হিসাব, ব্যাংকে রক্ষিত সঞ্চয়পত্র ও নন ব্যাংকিং ফাইনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানের আমানতসমূহ থেকে অর্থ উত্তোলন অবরুদ্ধ এবং স্থাবর সম্পদ জব্দ করা একান্ত প্রয়োজন।