• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতি দেওয়ার ‘ব্যাখ্যা’ দিল এনবিআর


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম
গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতি দেওয়ার ‘ব্যাখ্যা’ দিল এনবিআর
গ্রামীণ ব্যাংক। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক কেন করমুক্ত বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সেই বিতর্কের অবসান ঘটাতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের ব্যাখ্যায় বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ, ১৯৮৩-এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখ পর্যন্ত, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান (নীতি) অনুবিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা ৮টি আদেশ বা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে, উক্ত প্রতিষ্ঠানের যেকোনো আয়ের ওপর আরোপণীয় আয়কর, সুপারট্যাক্স বা ব্যবসায়িক মুনাফা কর প্রদান হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। পরে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর সিক্সথ শিডিউল পার্ট ‘এ’-এর প্যারা ১(এ) এবং ২০২৩ সালের আয়কর আইন ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ১-এর দফা (১৩) মোতাবেক মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধিত কোনো সত্তার ক্ষুদ্র ঋণ কর্মকাণ্ড হতে উদ্ভূত যেকোনো সার্ভিস চার্জ করমুক্ত রয়েছে।

এনবিআর জানায়, গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ এবং তৎপরবর্তী প্রণীত গ্রামীণ ব্যাংক আইন, ২০১৩-এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক কোনো তফশিলি ব্যাংক নয় এবং প্রতিষ্ঠানটি মূলত ক্ষুদ্র ঋণ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। সমজাতীয় সেবা অর্থাৎ ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম করা সত্ত্বেও শুধু মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের নিবন্ধিত না হওয়ায় আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংক একই প্রকার কর অব্যাহতির সুবিধা পাচ্ছে না। অন্য সব ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের মতো গ্রামীণ ব্যাংকে অনুরূপ কর অব্যাহতি সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশের আওতায় ১ জানুয়ারি ২০১১ হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখ পর্যন্ত এবং ১ জানুয়ারি ২০১৬ হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানকে কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

সমজাতীয় ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় গ্রামীণ ব্যাংক অনুরূপ কর অব্যাহতি সুবিধা না পাওয়ায় বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনে আয়কর আইনের আওতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সরকারি গেজেটের মাধ্যমে ২০২৪ সালে ৯ অক্টোবর দ্বারা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৯ তারিখ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের অর্জিত সব আয়কে শর্তসাপেক্ষে কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

এর আগে ১০ অক্টোবর এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে নিয়মিত আয়কর রিটার্ন দাখিল করার শর্তে কর সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কর অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছিল। গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৮৩ বাতিল করে সরকার যখন ২০১৩ সালে আইন করে, তখনও বহাল রাখা হয় এ সুবিধা। কিন্তু ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ওই সুবিধা বাদ দেয় তৎকালীন সরকার। দীর্ঘদিন পর সেই সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়া হলো।

গ্রামীণ ব্যাংক একটি আইন দ্বারা পরিচালিত পাবলিক অথরিটি। এর সূচনা ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের একটি গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে, যা গ্রামের গরিবদের ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য একটি ঋণ সরবরাহ ব্যবস্থা পরিকল্পনা করার জন্য পরিচালিত হয়। ১৯৮৩ সালের অক্টোবরে জাতীয় আইন দ্বারা গ্রামীণ ব্যাংককে একটি স্বাধীন ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়।

Link copied!