• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩০, ১২ রজব ১৪৪৬

শুল্ক-কর বাড়ানোর অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জাতীয় নাগরিক কমিটির


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৫:১৭ পিএম
শুল্ক-কর বাড়ানোর অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জাতীয় নাগরিক কমিটির
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন আখতার হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, মোবাইলে ফোনের সিম ব্যবহারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়িয়ে ২টি অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ দুটি অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি চালুর দাবি জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চুক্তির শর্ত পুনর্বিবেচনা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটো অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্ফীতি ও ব্যবসায়ের খরচ বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

আখতার হোসেন বলেন, “সরকার তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।”

আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ ও তার অর্থনৈতিক নীতিকে গণবিরোধী লুটেরা আখ্যায়িত করে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, “এমনিতেই মানুষের জীবনযাত্রা নাজুক অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় বিগত অবৈধ সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আপনারা জানেন, যেকোনো দেশের জন্য আইএমএফের লোন হলো, লোন প্রাপ্তির সর্বশেষ আশ্রয়। এই কঠিন ঋণের শর্ত হিসেবে কয়েকটি ধাপে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি এ অধ্যাদেশগুলো জারি করেছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে আখতার হোসেন বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন, অবৈধ সরকারের ঋণের এই শর্ত বর্তমান সরকার পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কি? তারা একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াতে পারে না।”

সম্প্রতি টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে এ প্রক্রিয়া ‘অবমাননাকর’ বলে মন্তব্য করেন কমিটির সদস্য সচিব। তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, এই দেশের নাগরিক কীভাবে ট্রাকের পেছনে ৫-১০ টাকা কমে চাল, ডাল, তেল, চিনি কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা কল্পনা করতে পারি না জনগণের প্রতি কতটা দায়হীন অনুভব করলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”

আখতার হোসেন আরও বলেন, “সরকার প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে পারে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করবে না। বিদ্যমান কর কাঠামোয় যে সীমাহীন দুর্নীতি হয় তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে রাজস্ব আয় বাড়বে। বিগত সরকার ১৫ সময়ে বিদেশে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। সেগুলো দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

এর আগে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিস্কুট, ওষুধ, পোশাক কেনাকাটা, মিষ্টি, বেশ কয়েক ধরনের টিস্যু, মোটরগাড়ির গ্যারেজ, এলপি গ্যাস, ওষুধ, মোবাইলে ফোনের সিম ব্যবহারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়িয়ে দুটি অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

চলতি অর্থবছরের মাঝপথে এসে আইএমএফের চাপে এসব পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট, সম্পূরক ও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!