স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি সোনার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, এমন বক্তব্য দেওয়ার পর এ নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার কোটবাড়ীতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) বার্ষিক পরিকল্পনা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ তথ্য প্রকাশ করেন। এরপর থেকেই ব্যাংকের সোনা কীভাবে গায়েব হলো, সেটি নিয়ে কৌতূহল ছড়িয়ে পড়ে।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন ঘটনাটি তিন বছর আগের এবং প্রায় আট হাজার ভরি সোনা কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে ভুয়া গ্রাহকরা তুলে নিয়েছিলেন। পরে এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে, যা এখনো বিচারাধীন।
ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসানুল গনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ওই ঘটনায় ব্যাংকের একটি চক্র জড়িত ছিল এবং তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সমবায় ব্যাংক মূলত একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। সমবায় আইনের বিধান অনুযায়ী এটি সমবায় খাতে অর্থ সরবরাহকারী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে থাকে। এটি সমবায় সমিতির ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ে ঋণ দিতে পারে।
সমবায় উপদেষ্টা বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কোথায় কী অবস্থা রয়েছে, সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি। সমবায় ব্যাংকের অবস্থা দেখতে গিয়ে জানলাম ১২ হাজার ভরি সোনার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তার বক্তব্য দেওয়ার পরপরই বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নতুন তথ্য মনে করে বিষয়টি নিয়ে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে ওঠেন।
তখন মামলায় অভিযোগ করা হয় এসব ব্যক্তিরা ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৩১৬ জন গ্রাহকের বন্ধক রাখা সাত হাজার ৩৯৮ ভরি ১১ আনা সোনা আত্মসাতের চেষ্টা করেছে, যার তখনকার বাজার মূল্য উল্লেখ করা হয় ৪০ কোটি ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮৮ টাকা।
এর মধ্যে, ভুয়া ব্যক্তিকে গ্রাহক সাজিয়ে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার সোনা তারা আত্মসাৎ করেন। এ মামলা এখনো চলছে।
কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি নামের একটি সমবায় সমিতির সদস্যরা মোট প্রায় ১২ হাজার ভরি সোনা ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করেছিল। একপর্যায়ে ওই সমবায় সমিতি দেউলিয়া হয়ে যায়। এর মধ্যে করোনা মহামারি চলে আসে। সবমিলিয়ে যথাসময়ে ঋণ শোধ না করায় একপর্যায়ে ব্যাংক সেই সোনা নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়।