ঋণের কথা বলে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশের ডাক দেওয়া অহিংস গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমীনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাকে আটক করা হয়।
গণমাধ্যমকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিল মনসুর।
থানা সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে জনপ্রতি এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে, এজন্য শাহবাগে বিশাল সমাবেশে জড়ো হতে হবে। এমন কথা বলে রাজধানীর শাহবাগে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশের চেষ্টা করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার অভিযোগ ওঠে অহিংস গণ-অভ্যুত্থান নামের একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে মোস্তফা আমীনকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে ‘অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের ব্যানারে কয়েকটি বাস এবং মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আসেন হাজার হাজার মানুষ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীরা সেসব বাস সরিয়ে দেয়।
জানা যায়, রাত ১টা থেকে দুপুর সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশ থেকে বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপে করো ঢাকায় মানুষকে জড়ো করা হচ্ছিল। এখানে যারা আসবে তাদের এক লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো শর্ত ছাড়াই দেওয়া হবে এমন প্রলোভন দেখিয়ে একটি চক্র নিয়ে আসে। গণঅভ্যুত্থান ও প্রতিবিপ্লবের ব্যানারে তারা রাজধানীতে জড়ো হয়। এখানে আসাদের প্রায় অধিকাংশই গ্রামের ও সাধারণ মানুষ।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। টিএসসি কিংবা শাহবাগ অবরোধের উদ্দেশ্য ছিল উপস্থিতদের। সেখানে দাঁড়াতে না পারলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার কথা ছিল বলেও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এক নারী বলেন, “আমাদের এক লাখ টাকা করে দেবে বলেছিল, এরপর মাসে তিন হাজার টাকা করে কিস্তি দিয়ে সেই টাকা পরিশোধ করতে বলেছিল। সেজন্যই এসেছি। আমাদের ফরম পূরণ করিয়ে নেয়।”
মানিকগঞ্জ থেকে বেলা ১১টারে দিকে শাহবাগের পথে আসতে শুরু করে ৬টি বাস। এ সময় বাসে থাকা যাত্রীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, “কাগজপত্র নিয়ে জরিনা কলেজের সামনে থেকে আমাদের বাসে উঠতে বলা হয়। টাকা দেওয়া হবে বলে আমাদের ঢাকায় নিয়ে আসে।”
পুলিশ জানিয়েছে, একটি চক্র কৌশলে রাতের আঁধারে ঢাকার শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা দখলের পাঁয়তারা করেছিল। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের পরিকল্পনাও ছিল তাদের। প্রলোভন দেখানো বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। ভুয়া গণ-অভ্যুত্থান ও প্রতিবিপ্লবের ডাক দেওয়া চক্রের হোতাদের খুঁজে বের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাবুদ্দিন শাহিন গণমাধ্যমকে বলেন, “অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন শাহবাগে অনেক মানুষ জমায়েত করার জন্য অনুমতি চেয়েছিল। পুলিশ অনুমতি দেয়নি। সংগঠনটি গ্রামের লোকজনকে প্রলোভন দিয়েছিল, যারা এই সমাবেশে আসবেন, তাদের এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। পুলিশ লোকজনকে জড়ো হতে দেয়নি।”