• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এমপি আজিম হত্যা : খাল থেকে হাড়গোড় উদ্ধার


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
এমপি আজিম হত্যা :  খাল থেকে হাড়গোড় উদ্ধার

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম হত্যায় গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সিআইডি তাকে নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। এ অভিযানে হাড়গোড় উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। 

রোববার (৯ জুন) সকালে সিয়ামকে নিয়ে ভাঙ্গুড় এলাকায় পৌঁছে বাগজোলা খালে নামেন সিআইডি কর্মকর্তারা। সেখান থেকেই হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।

এর আগে, শনিবার সিয়ামকে ১৪ দিনের রিমান্ড দেন কলকাতার বারাসাতের আদালত।

অভিযানের শুরুতেই সিয়ামের দেখিয়ে দেওয়া স্থানে তল্লাশি শুরু করেন তারা। তবে এর আগে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদ দেহাংশ ফেলে দেওয়ার যে স্থানের কথা বলেছিল আজ সিয়াম সেই স্থানের পরিবর্তে ভিন্ন স্থান দেখায়। আর সেখানে তল্লাশি চালিয়েই একাধিক হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে হাড়গুলো দেখে মানুষের হাড় বলেই মনে হচ্ছে। 

আসামি সিয়ামের দাবি, এগুলো এমপি আজিমের শরীরের দেহাংশ। যদিও সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এমপির দেহাংশ কিনা বিষয়টি নিশ্চিত হতে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়গুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৭ জুন) আজিম হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে নেপালে আটক সিয়াম হোসেনকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেছেন, আনার হত্যাকাণ্ডে যে বা যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। শনিবার (৮ ‍জুন) রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

হারুন অর রশিদ বলেন, আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে যে বা যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে সিয়ামকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভারতে যাবে ডিবি।

গত ২৬ মে আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে কলকাতায় যায় ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

এরপর সিয়ামকে নেপালে আটকের খবর পেয়ে ১ জুন সেখানে উড়ে যান ডিবির হারুন। ৪ জুন নেপাল থেকে ফিরে শাহজালাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে নেপালের চুক্তি রয়েছে। ভারতীয় পুলিশের কাছে সিয়ামকে দিলেও হবে। কারণ তাকে নিয়ে আলামত উদ্ধারসহ তদন্তকে এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।

গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন আনোয়ারুল আজিম।

বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের।

২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আজিম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।

হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাহাজি ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে দুদফা রিমান্ডে নেয়া হয়। আর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বারাসাতের আদালত।

এছাড়া বর্তমানে কলকাতা পুলিশের হেফাজতে থাকা সিয়ামের বিরুদ্ধে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আমানের সহযোগী সাইফুল মেম্বারকেও রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

অন্যদিকে আজিম হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে ৬ জুন আটক করেছে ডিবি।

Link copied!