প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আটকসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের’ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে ১৩ দেশের জোট ‘মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন’ (এমএফসি)।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা এই জোট বলেছে, “আমরা এমএফসির নিম্নস্বাক্ষরকারী সদস্যদেশসমূহ বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির বিষয়ে উদ্বিগ্ন।”
বিবৃতিতে এমএফসি জানায়, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহকারীদের ওপর সহিংসতা, আল জাজিরার লন্ডনভিত্তিক সাংবাদিকের ভাইয়ের ওপরে হামলা, ঢাকা ট্রিবিউনের ফটোসাংবাদিকের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি প্রথম আলোর সাংবাদিককে আটকের খবর তাদের উদ্বিগ্ন করেছে।
সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুস্থ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।
দেশে ও দেশের বাইরে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের অংশীদারত্বমূলক সংগঠন মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন। এটি ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ছয় মহাদেশের ৫০টির বেশি দেশ এর সদস্য। এমএসএফের সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। সংগঠনটি সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও কাজ করে। আলোচনা, কূটনৈতিক তৎপরতা, আইনি কাঠামোর সংস্কারে উৎসাহ দেওয়ার মাধ্যমে কাজ করে এমএফসি।
প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটার নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের এক সংবাদ প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ তথ্য প্রচারের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের নেতা মো. গোলাম কিবরিয়া। সেই মামলায় শামসকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, জাতির জন্য মানহানিকর’ তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ ও প্রচারের অভিযোগে বুধবার রাতে শামসের বিরুদ্ধে রমনা থানায় আরেকটি মামলা করেন আইনজীবী মশিউর মালেক। এই মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার ভোরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন আমবাগান এলাকার বাসা থেকে শামসকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে।