প্রয়াত সাবেক সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরীর মরদেহ তার নির্বাচনী এলাকা শেরপুরে নেওয়া হচ্ছে না। তাকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী।
মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “বৃহস্পতিবার বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নতুন জায়গা চাওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের কাছে। জায়গা পেলে সেখানে দাফন করা হবে, না পেলে তার স্বামী বজলুর রহমানের কবরে দাফন হবে।”
মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী আরও জানান, এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মতিয়া চৌধুরীর মরদেহ নিজের নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া হবে না।
বুধবার হার্ট অ্যাটাকে মারা যান বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসেবে পরিচিত মতিয়া চৌধুরী। ৮২ বছর বয়সী এই আওয়ামী লীগ নেতাকে সকালে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তার মৃত্যু হয়। হৃদরোগসহ শারীরিক কিছু জটিলতায় ভুগছিলেন মতিয়া চৌধুরী।
১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে জন্ম নেন মতিয়া চৌধুরী। তিনি শেরপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন ৫ বার। দায়িত্ব পালন করেছেন কৃষিমন্ত্রী হিসেবেও।
ইডেন কলেজে পড়াশোনার সময়ে রাজনীতিতে জড়ান মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হন। ১৯৬৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপ) যোগ দেন তিনি। পরে কার্যকরী কমিটির সদস্যও হন। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রচারণা ও মুক্তিযুদ্ধে আহতদের চিকিৎসায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন মতিয়া চৌধুরী।
১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হন এই নেতা। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়।
মতিয়া চৌধুরীর বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। তার স্বামী খ্যাতিমান সাংবাদিক প্রয়াত বজলুর রহমান।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩ দফায় কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংসদ বিলুপ্ত হলে এমপি পদ হারান মতিয়া চৌধুরী।