• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্ধকার কাটিয়ে আলোর যাত্রা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
অন্ধকার কাটিয়ে আলোর যাত্রা

কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা থেকে ‘আমরা তো তিমির বিনাশী’ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায়। বরাবরের মতো এবারও বাংলার লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন উপকরণ, গ্রামীণ জীবনের অনুষঙ্গ, পশুপাখি, ফুল- এসবের প্রতীক ও রকমারি মুখোশ বহন করা হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায়।

রোববার (১৪ এপ্রিল) পয়লা বৈশাখের সকালে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে। শাহবাগ মোড় ঘুরে রমনা টেনিস কমপ্লেক্সের সামনে দিয়ে শিশুপার্কের মোড় ঘুরে আসে। এরপর আবার শাহবাগ দিয়ে টিএসসি চত্বর ঘুরে চারুকলা অনুষদের সামনে এসে শেষ হয় বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রা।

ঢাকঢোলের বাদ্যের সঙ্গে শিশু থেকে প্রৌঢ়, নানা বয়সের মানুষ নৃত্যের ছন্দে তালে মেতে ওঠে। দেখা যায় কারও মাথায় পয়লা বৈশাখ লেখা ব্যান্ড, কারও মাথায় ফুলের মালা। কেউ হাতে নিয়েছেন ছোট চরকি, কেউ মাছ, পাখি, প্যাঁচা, হাতি ও ফুলের আকৃতির রঙিন মুখোশ। পাশে হাঁটছে বিশাল আকারের হাতি, বনরুই, পাখির প্রতীক।

রাজধানীতে বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম আকর্ষণ শোভাযাত্রা। এতে অংশ নিতে বাঙালিয়ানা সাজে হাজারো উৎসবপ্রেমীর ঢল নামে শাহবাগ থেকে চারুকলা পর্যন্ত। এবারও বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। শোভাযাত্রা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল তৎপর।

শুরুতে ছিল র‍্যাবের মোটরসাইকেলের টহল টিম। এরপর সোয়াটের সদস্যরা। এরপর পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা। একাধিক ড্রোন উড়ছিল। ওয়াচ টাওয়ার থেকেও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক ধাপের পর মূল শোভাযাত্রা হাঁটতে শুরু করে।

শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদসহ বিশিষ্ট অতিথিরা।

ঢাবি উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘প্রতিবছর মঙ্গল শোভাযাত্রা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। অন্ধকারকে কাটিয়ে আলোর পথে যাব, এটি আমাদের প্রত্যাশা। তরুণসমাজ মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। “তিমির বিনাশী” স্লোগান অন্তরে ধারণ করে হবে অগ্রযাত্রা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিল্পী ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত এই শোভাযাত্রা নববর্ষের পুরো উৎসবকেই বর্ণাঢ্য করে তোলে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালে বাংলাদেশের পয়লা বৈশাখের এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে।

Link copied!