আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান খালাস পেয়েছেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মাহমুদুর রহমানের পক্ষে করা আপিল মঞ্জুর করে এই রায় দেন ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজ।
এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওইদিন মামলাটিতে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। এরপর সাজা বাতিল চেয়ে গত ৩ অক্টোবর তিনি মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। ওইদিন তার পক্ষে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন।
সোমবার সেই আপিলের চূড়ান্ত রায়ে মাহমুদুর রহমানকে খালাস দেন আদালত। শুনানিকালে তিনি আদালতে হাজির ছিলেন।
জানা গেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর ৩ আসামিরা হলেন, জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুইয়া।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসাথে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
এই মামলায় ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর সজীব ওয়াজেদ জয় আদালতে সাক্ষ্য দেন।
২০১৫ সালের ৩ আগস্ট পল্টন থানায় এ মামলা করেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনও সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।
২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল এই মামলায় শফিক রেহমান গ্রেফতার হন। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক হন।