দীর্ঘতম রাত আজ। সঙ্গে থাকবে চাঁদ। সারা রাতই চাঁদের আলো পৃথিবীকে সঙ্গ দেবে। রাত দীর্ঘ হলে কুয়াশায় গাছের পাতায় ফোঁটা ফোঁটা পানি জমবে। গ্রামবাংলায় প্যাঁচার নানা ধরনের ডাকের সঙ্গে পাতাঝরা পানির টুপ টুপ শব্দ মোহময় করে তুলবে আলো-আঁধারের প্রকৃতিকে।
বছরের এমন রাতটি হতে যাচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর)। বাংলাদেশসহ উত্তর গোলার্ধের সব দেশের মানুষদের জন্য আজ বছরের সবচেয়ে দীর্ঘতম রাত। এ ছাড়া আগামীকাল শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) হবে বছরের ক্ষুদ্রতম দিন। উত্তর গোলার্ধে আজ দ্রুত সন্ধ্যা নামলেও বছরের সবচেয়ে বেশি সময় লাগবে রাত শেষ হতে।
২১ ডিসেম্বর সূর্য তার দক্ষিণায়নকালে নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে মকরক্রান্তি রেখায় পৌঁছায়। ফলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে নেমে আসে পৃথিবীর দীর্ঘতম রাত আর ২২ ডিসেম্বর ক্ষুদ্রতম দিন। সূর্যের এ পরিক্রমকে বলে দক্ষিণ অয়নান্ত।
তবে বিপরীত অবস্থা থাকবে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে। সেখানে একই সময় হবে দীর্ঘতম দিন ও স্বল্পতম রাত।
জলবিষুব সংঘটনের পর সূর্য নিরক্ষরেখা অতিক্রম করার পর পৃথিবী যতই তার কক্ষপথে অগ্রসর হয়, ততই পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে দূরে যেতে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকতে। ফলে উত্তর গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমশ হ্রাস পায় এবং রাতের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।
মূলত ২১ ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তি রেখার ওপর অবস্থান করে এবং উত্তর মেরু সূর্য থেকে কিছুটা দূরে হেলে থাকার কারণেই রাত বড় হয় আর এর পরের দিনটি ছোট হয়। তবে বাংলাদেশে আজ বছরের দীর্ঘতম রাত হলেও পূর্ণিমার কারণে আকাশে থাকবে চাঁদের উজ্জ্বল আলো।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের মতে, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে এর কাত পরিবর্তিত হয়, কখনো সূর্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে আবার কখনো দূরে। ২১ ডিসেম্বর, উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে তার সর্বাধিক কাত হয়ে যায়, এইভাবে সূর্যের রশ্মিগুলো আমাদেরকে অনেক অগভীর কোণে আঘাত করে। শীতকালীন অয়নকাল হলো সেই মুহূর্ত যখন স্পটলাইট উত্তর গোলার্ধ থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে, দীর্ঘ ছায়া ফেলে এবং বছরের দীর্ঘতম রাতে আমাদের নিমজ্জিত করে।