• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩০, ১৮ রজব ১৪৪৬

বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম
বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন

বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ২০২৫ সালের বিশ্ব প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।

সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে—নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করেছে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সংস্কার এবং জবাবদিহিরও অঙ্গীকার করেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত জুলাই এবং আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে তিন সপ্তাহের আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত ও বেপরোয়া গুলিতে এক হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার।

এবার ৫৪৬ পৃষ্ঠার বিশ্ব প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ১০০টিরও বেশি দেশে মানবাধিকার চর্চার মূল্যায়ন করেছে। প্রারম্ভিক নিবন্ধে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক তিরানা হাসান একটি উল্লেখ করেছেন—বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সাংবাদিকদের অন্যায়ভাবে আটক করেছে, তাদের দমন করেছে এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনী নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, বাস্তুচ্যুত করেছে এবং মানবিক সহায়তা প্রদানে বাধা দিয়েছে। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত ৭০ টিরও বেশি দেশের জাতীয় নির্বাচনে, কর্তৃত্ববাদী নেতারা তাঁদের বৈষম্যমূলক বক্তব্য ও নীতির মাধ্যমে প্রভাব বাড়িয়েছেন।

বাংলাদেশের বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ভবিষ্যতের পথে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু গভীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন ছাড়া এই অগ্রগতি নস্যাৎ হয়ে যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা দেওয়া, জোরপূর্বক গুমের ঘটনাগুলোর জন্য বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বেসামরিক নজরদারি নিশ্চিত করা।”

প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মীরা দাবি করেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী বিরোধী দলের সমর্থক ও সাংবাদিকদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, তাদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা এবং আইনগত সহায়তা না দেওয়ার মতো কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিসংঘের জোরপূর্বক গুম বিরোধী কনভেনশনে সই করেছে।

এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও গ্যাংয়ের সহিংসতার শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত না হওয়া এসব মানুষ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে এবং চিকিৎসা সহায়তা নিতে ভয় পাচ্ছে। কারণ তারা মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর শঙ্কায় থাকে।

এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করার ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয়-এর সহায়তায় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর স্বাধীন নজরদারি এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। ‘কুখ্যাত’ আখ্যা দিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত করারও সুপারিশ করা হয়েছে।

পাশাপাশি জোরপূর্বক গুমের শিকার পরিবারগুলোর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!