• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অসহায় দিন কাটছে ২১ আগস্ট নিহত লিটনের বাবা-মায়ের


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৩, ১১:১৮ এএম
অসহায় দিন কাটছে ২১ আগস্ট নিহত লিটনের বাবা-মায়ের

লিটন মুন্সী ছিলেন যুবলীগ নেতা। মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামের আইয়ুব আলী মুন্সীর ছেলে। দলের জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। যেখানেই আওয়ামী লীগের মিটিং মিছিল হতো, সেখানেই ছুটে যেতেন লিটন। দলের টানেই লিটন সেদিন সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা গিয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার সমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নির্মমভাবে নিহত হয় তিনি।

নিহত লিটন মুন্সীর পরিবারে শোকের ছায়া এখনও কাটেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় ওই পরিবারে কিছুটা হলেও আনন্দ বইছে। কিন্তু গত ৪ বছর ধরে কেউই খবর নেয়নি লিটনের বাবা-মায়ের। এখন অসহায় জীবন যাপন করছেন তারা। পুরোনো ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। তাই গ্রামের বাড়িতে সরকারিভাবে একটি ঘর নির্মাণের দাবি তাদের।

বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবার কেমন আছেন, জানার জন্য রোববার (২০ আগস্ট) রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা নিহত লিটন মুন্সীর বাড়ি গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ১৯ বছর পার হলেও লিটনের বাবা-মায়ের ভাগ্যের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। লিটনের স্ত্রী মাফিয়া বেগম লিটন মারা যাওয়ার ৩ বছর পরই এক প্রবাসী যুবককে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে একমাত্র মেয়ে মিথিলা মোটামুটি ভালোই আছে। এ সময় লিটন মুন্সীর মা আছিয়া বেগম, বাবা আইয়ুব আলী মুন্সী কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মা আছিয়া বেগম বলেন, “আমার বাবা (লিটন মুন্সী) বলেছিল পুরনো ঘর মেরামত করার দরকার নেই। আমি এখানে বিল্ডিং দিব। কিন্তু সেটা আর হয় নাই। পুরনো ঘরেই আমরা থাকি। ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ঘর নির্মাণ করে দেন তাহলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভালোভাবে থাকতে পারব। আমরা দুজনেই অসুস্থ। প্রতিমাসে আমাদের ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এসব টাকা পাব কোথায়? শুনেছি প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে লিটনের মেয়ে মিথিলার নামে ঢাকায় একটি ফ্লাট বাসা ও ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও প্রতিমাসে তার খরচ বাবদ ৫ হাজার করে টাকা দেন। মিথিলা মাদারীপুর থাকে। মাঝে মাঝে আমাদের কাছে ফোন করে।”

লিটনের বাবা আইয়ুব আলী মুন্সী বলেন, “আমার ছেলের তো কোনো দোষ ছিল না। আমার একমাত্র ছেলেকে কবরে শুইয়ে রেখে কীভাবে বেঁচে আছি বলতে পারেন? সরকারিভাবে ৫ লাখ টাকা পেয়েছিলাম। চিকিৎসা করতে সে টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন আমি মাসে ৩ হাজার টাকা করে সরকারি ভাতা পাই। এতে আমাদের সংসার চলে না।”

নিহত লিটন মুন্সীর একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান মিথিলা বলেন, “২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যখন আমার বাবা মারা যান তখন আমি খুবই ছোট ছিলাম। বাবা কী জিনিস তা বুঝতে পারিনি। বাবার আদর পাওয়ার আগেই বাবাকে হারিয়েছি। হামলার ঘটনায় অপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হলেই আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে।”
 

Link copied!