অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন ঢাকা জজ কোর্টের এক আইনজীবী। তার নাম মো. সফিকুল ইসলাম সবুজ খান। নোটিশ পাওয়ার ৩ দিনের মধ্যে তাদের পদত্যাগ কার্যকর করতে অনুরোধ করে নিজেকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। অন্যথায় এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) তিনি এ নোটিশ পাঠান।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। বিগত ১৬ বছর পর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যার নায়ক খুনি শেখ হাসিনার পতনের পর সাধারণ ছাত্র-জনতা ও দেশবাসী একটি সুন্দর সরকার চেয়েছিল, সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে একটি ক্লিন ইমেজ, সজ্জন ও সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করবেন। কিন্তু আমরা দেখছি ফ্যাসিস্ট সরকারের উপাদান বিদ্যমান এমন ব্যক্তিদের উপদেষ্টা মণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। বিতর্কিত ও খুনি হাসিনার সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের উপদেষ্টা করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি নোবেলজয়ী ব্যক্তির উপদেষ্টামণ্ডলীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও তার স্ত্রী তিশা বিগত স্বৈরাচার সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে অনেক সুবিধার ভাগিদার হয়ে আজকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিজয়ের ভাগিদারও নিতে চায়। অন্য উপদেষ্টা বশির উদ্দিন খুনি শেখ হাসিনার নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার ৪৯নং এফআইআরভুক্ত অন্যতম আসামি এবং আওয়ামী সরকারের এমপির ভাই। বিতর্কিত ও বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সুবিধাভোগী মুজিববাদ আদর্শের অনুসারীদের উপদেষ্টামণ্ডলী থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাই।
ওই আইনজীবী নোটিশে বলেন, “জুলাইয়ের বিপ্লবের নিহত ও আহত শহীদ ছাত্র-জনতার তাজা রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করে অবিলম্বে লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার সুবিধাভোগী বিতর্কিত ও ছাত্র হত্যার আসামিদের উপদেষ্টামণ্ডলীতে দেখতে চায় না।”
নোটিশদাতা আইনজীবীর দাবি, স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার পতনের আন্দোলনে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে তিনি গত ১৭টি বছর নানা নির্যাতন হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছেন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২৬ দিন গুলির মুখে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদ বিদায় করার গর্বিত অংশীদার হিসাবে তাকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছেন।