রাজধানীর কেরানীগঞ্জে বিয়ের পরদিনই প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন স্ত্রীসহ ৫ জন। ভুক্তভোগী স্বামীর নাম মো. ফয়সাল (৩০)।
গ্রেপ্তাররা হলেন ফয়সালের স্ত্রী মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস (১৮), তার প্রেমিক মো. রিফাত শিকদার (১৯), মোহাম্মদ রাজ (২১), মো. মেহেদী হাসান (১৯) ও মোছা. কাশফিয়া আক্তার (১৫)।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলের একটি বাড়ি থেকে র্যাব-১০ এর একটি দল তাদের গ্রেপ্তার করে ও অপহৃত ফয়সালকে উদ্ধার করে।
র্যাব বলছে, বিয়ের পরের দিন ফয়সালকে অপহরণের করে তার কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে জান্নাতুল ও তার প্রেমিক। এই টাকা নিয়ে তারা অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিল।
রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে র্যাব-১০-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তাপস কর্মকার এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বেয়ারা বাজার এলাকায় বসবাসকারী মো. ফয়সাল গত ৭ নভেম্বর পারিবারিক সম্মতিতে একই এলাকার মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌসকে বিয়ে করেন। পরদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফয়সাল ও তার স্ত্রী জান্নাতুল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের সারিঘাট এলাকায় ঘুরতে যান। এর দুই ঘণ্টা পর জান্নাতুল একা তার স্বামীর বাসায় গিয়ে শাশুড়িকে জানান যে, অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন ফয়সালকে মারধর করে জোরপূর্বক একটি সিএনজিতে অজ্ঞাত স্থানে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
ঘটনার পর ফয়সালের মা তার আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে অজ্ঞাত অপহরণকারীরা ফয়সালের মায়ের মোবাইল নম্বরে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন।
পরে ফয়সালের মা বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন।
র্যাব জানায়, বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল অপহৃত ফয়সালকে দ্রুত উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং মামলা রুজুর ১ ঘণ্টার মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় মতিঝিলের গোপীবাগ এলাকা থেকে ফয়সালকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করাসহ অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা রিফাত শিকদার, মোহাম্মদ রাজ ও মো. মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই তারিখে ওয়ারী থানাধীন গোপীবাগ এলাকা থেকে অপহরণকারী চক্রের অপর দুই আসামি মোছা. কাশফিয়া আক্তার ও ভিকটিম ফয়সালের স্ত্রী মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়, ভিকটিম ফয়সালের স্ত্রী জান্নাতের সঙ্গে আসামি রিফাতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ফয়সালের সঙ্গে বিয়ের পরের দিনই রিফাত ও জান্নাত তাদের পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক সহযোগীদের সহায়তায় ফয়সালকে অপরহণ করে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন।
র্যাব জানায়, টাকা নিয়ে রিফাত ও জান্নাত অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিল। গ্রেপ্তার আসামিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।