• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘খেলা হবে’ ধ্বনি সংখ্যালঘুদের শঙ্কিত করে : রানা দাশগুপ্ত


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৩, ০৮:৫৫ পিএম
‘খেলা হবে’ ধ্বনি সংখ্যালঘুদের শঙ্কিত করে : রানা দাশগুপ্ত

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, “রাজনীতির মাঠে ‘খেলা হবে’ বলে একটি ধ্বনি প্রধান দলগুলোর মধ্যে বার বার উচ্চারিত হচ্ছে আমরা লক্ষ করছি। এ ধ্বনি এ দেশের ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের শঙ্কিত করে। কেননা, অতীতের প্রায় সব নির্বাচনে এ দেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে খেলা হয়েছে। যে কারণে নির্বাচনের পূর্বাপর সময়ে অহেতুক তারা নির্যাতিত হয়েছে।”

বুধবার (৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন ও রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলে মন্তব্য করেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “যে কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বাধীন সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে।”

রানা দাশগুপ্ত বলেন, “সরকারি দল আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচন ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল তার মধ্যে রয়েছে- সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্যবিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠন।”

তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি আমাদের রয়েছে। আমরা আজকের এ সংবাদ সম্মেলন থেকে দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দকেও এসব দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে নাগরিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।”

কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০২২ সালে আমরা এসব দাবিতে অনেকগুলো কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু সরকারের কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত না হওয়ায় ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বাধীন সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা একই দাবিতে আগামী ৬ জানুয়ারি সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখী রোডমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করে। আমরা আশা করছি, বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু আদিবাসী জনগণ এতে অংশগ্রহণ করে আগামী ৭ জানুয়ারি ঢাকার শাহবাগ চত্বরে দুপুরবেলা জমায়েত হবে এবং সেখান থেকে বিকাল ৪টার দিকে পদযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন এবং সেখানে তার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করবেন।”

রানা দাশগুপ্তের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রী এ স্মারকলিপি আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করবেন এবং সরকারি দলের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় এবং অস্তিত্বের সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষে ঐক্যমোর্চা গঠন করে মানবাধিকারের আন্দোলন পরিচালনা করা ছাড়া আজ সংখ্যালঘুদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই।”

এই আলোকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ইতোমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৩৩টি সংগঠন নিয়ে ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’ জাতীয়ভাবে গঠন করেছে এবং সারা দেশে এর সম্প্রসারণে উদ্যোগ নিয়েছে। এ সময় নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় সরকারি দল আওয়ামী লীগ যেসব প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিল তা বাস্তবায়নের দাবিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ৬ জানুয়ারি সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখী রোডমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ,  সুব্রত চৌধুরী,  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!