• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সরকারি বাড়ির ভাড়া পরিশোধ করছেন না বিচারপতি মানিক


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ০১:৫০ পিএম
সরকারি বাড়ির ভাড়া পরিশোধ করছেন না বিচারপতি মানিক

রাজধানীর গুলশানে একটি সরকারি বাড়ি দখলে রেখেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। অবসরে যাওয়ার পর এক বছরের বেশি সময় তিনি এ বাড়ি দখলে রাখেন। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বাড়িটি ছাড়ার জন্য বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তিনি বাড়িটি ছাড়ছিলেন না।

অবশেষে ২০১৭ সালের মে মাসে শামসুদ্দিন চৌধুরী বাড়িটি ছাড়েন। তবে বাড়িভাড়া, গ্যাস ও পানি বিল বাবদ সরকারের পাওনা ১৪ লাখ ১৯ হাজার ২০০ টাকা তিনি এখনো পরিশোধ করেননি।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।   

ওই প্রতিবেদনে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে শামসুদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথমে ফোন ধরেন। পরিচয় দেওয়ার পর তিনি কেটে দেন। এরপর দফায় দফায় কল দিলেও তিনি ধরেননি। মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে বাড়িভাড়ার বিষয়টি জানিয়ে প্রশ্ন পাঠালেও জবাব পাওয়া যায়নি।

সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের নথি অনুযায়ী, শামসুদ্দিন চৌধুরী বিচারপতি হিসেবে ঢাকার গুলশানে ৩৫ নম্বর সড়কে সরকারি একটি বাড়ি বরাদ্দ পেয়ে সেখানে ওঠেন ২০১২ সালের নভেম্বরে। তিনি অবসরে যান ২০১৫ সালের ২ অক্টোবর।

অবসরের পর বাড়িটিতে আরও দুই বছর থাকবেন বলে জানিয়ে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরকে চিঠি দেন শামসুদ্দিন চৌধুরী। আবাসন পরিদপ্তর সূত্র জানায়, তাকে ছয় মাস থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। সে হিসেবে বিচারপতি মানিকের বাড়ি ছাড়ার কথা ২০১৬ সালের এপ্রিলে। কিন্তু ওই সময়ে তিনি বাড়ি ছাড়েননি। ছাড়েন আরও এক বছরের কিছু বেশি সময় পর।

সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের সাম্প্রতিক হিসাবে, শামসুদ্দিন চৌধুরী তাকে দেওয়া সময়ের চেয়ে যত দিন বেশি সময় ওই বাড়িতে ছিলেন, সেই সময়ের বাড়িভাড়া, পানি বিল ও গ্যাস বিল বাবদ সরকারের পাওনা দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ টাকা। এর বাইরে সরকারি চাকরিরত অবস্থায় তিন বছর ওই বাড়িতে থাকার সময় তার বেতন থেকে বাড়িভাড়া, পানি বিল ও গ্যাস কর্তন করার বিবরণীর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তার কাছে ওই তিন বছরে পরিষেবা বিলের বিবরণী চাওয়া হয়েছিল। তবে তিনি তা দেননি।

আবাসন পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই তিন বছরে কত টাকা পাওনা, সে হিসাব তারা করেননি।

অবসরে যাওয়ার পর সরকারি বাড়ি ছাড়তে শামসুদ্দিন চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছিল সরকারি আবাসন পরিদপ্তর। নথিপত্র বলছে, চিঠির জবাবে শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, অবসরে যাওয়ার পর বিচারপতিরা ১২ মাস বিনা ভাড়ায় সরকারি বাসায় বসবাস করতে পারেন। এর জবাবে আবাসন পরিদপ্তর থেকে জানানো হয়, বিচারপতিরা অবসরে যাওয়ার পর এক বছর বিনা ভাড়ায় থাকতে পারার সরকারি কোনো আদেশ, নির্দেশ বা পরিপত্র নেই।

সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের দুজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বকেয়া টাকা চাইতে গেলে শামসুদ্দিন চৌধুরী অস্বীকৃতি জানাতেন। বাজে ব্যবহারও করতেন। পরে তার কাছে টাকা চাওয়া বন্ধ করে দেন কর্মকর্তারা।

নিয়ম অনুযায়ী সরকারি বাসা ছেড়ে দেওয়ার পর সব কর্মকর্তাকে আবাসন পরিদপ্তর থেকে না-দাবি সনদ নিতে হয়। শামসুদ্দিন চৌধুরী এই সনদের জন্য আবেদনই করেননি।

শামসুদ্দিন চৌধুরী সরকারি ওই বাড়ি ছাড়ার পর সেখানে ওঠেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস। সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর তিনি ওই বাড়ি ছেড়ে দেন। বাড়ি ছাড়ার পর তার বাড়িভাড়াসহ সব পরিষেবা বিলের বিবরণী আবাসন পরিদপ্তরে জমা দেন। বাড়ি ছাড়ার পর এসব বিবরণী জমা দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু শামসুদ্দিন চৌধুরী তা দেননি।

Link copied!