আইভি রহমান নারী মুক্তি আন্দোলনের নেতা ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। আইভি রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেছেন, “জেনে নাও, তুমি নারী মুক্তির সংগ্রাম করেছ। মেয়েদের অধিকারগুলো হাতে তুলে দিয়েছ। তুমি সবার হৃদয়ে আছ।”
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী বেগম আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, “আমাদের নেত্রী ভোটার লিস্টে বাবার নামের সঙ্গে সেখানে মায়ের নামও যোগ করেছেন। হাশরের ভোটার লিস্টে মায়ের নামে ডাকা হবে, এটাই হলো বাস্তবতা। মায়ের নাম দেওয়ার জন্য জামায়াত-বিএনপি আর আমাদের দেশের কিছু রক্ষণশীল মানুষ অনেক কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের উত্থান প্রসঙ্গে মতিয়া চৌধুরী বলেন, “জিল্লুর ভাই ছিলেন উচ্চ স্থানে, তার পেছনে ছিলেন আইভি। সংরক্ষিত মহিলা এমপি উনি হতে চাননি। আইভি বলতেন, ‘জিল্লুর রহমান সাহেব সামনে আছেন, আমি পিছিয়ে থেকে সব গুছিয়ে দিই।’ সফল মা, আপন দৃপ্তিতে উজ্জ্বল নেতা ছিল আইভি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেঁচে যাওয়া প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদ উপনেতা বলেন, “আল্লাহ যদি তার রহমতের চাদর দিয়ে নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) সেদিন রক্ষা না করতেন, তাহলে কোনো অঙ্কেই ওনার বাঁচার হিসাব মিলত না। তবুও সেদিন শব্দে ওনার কানের পর্দা ফেটে গিয়েছিল।”
সেদিনের (২১ আগস্ট) ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, “সেদিন মিছিলে যাব বলে স্টেজ থেকে নেমে আমি সামনের দিকে এগুচ্ছি। তখন আইভি বলল, ‘আপনি আজকে মেয়েদের সঙ্গে যাবেন।’ আমি তখন বললাম, তোমার পায়ে ফ্র্যাকচার, তুমি তো পুরোটা যাবে না। আজকের মিছিলটা গুরুত্বপূর্ণ, আমি সামনের দিকে যাই। এরপর ব্যাংকের সামনের কদম গাছটার সামনে গিয়ে আমি দাঁড়িয়েছি। তখনই পটকার মতো সাধারণ শব্দ। তেমন ধোঁয়াও নাই। কিন্তু এত স্বাভাবিক একটা শব্দের ভেতরে এত মৃত্যু লুকিয়ে ছিল। তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।”
আইভি রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটির সভাপতি এম এ করিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন, সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা প্রমুখ।