সামাজিক সালিশ ও বিচারের মধ্য দিয়ে মীমাংসা করলে মামলা কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেছেন, সালিশের মাধ্যমে সমাজে মামলা কমানো সম্ভব। সেজন্য সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে নাটোর জজ আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা খুব চেষ্টা করছি মামলা শেষ করতে। সমাজে কিছু হলেই আমরা মামলা করতে চলে যাই। যদি এটা কমে যায় তা হলে অনেক অংশে মামলা কমে যাবে। এত মামলা শেষ করতে পারেন না বিচারকরা। প্রতি বছর ১০০ বিচারক নিয়োগ করা হয়। একজন বিচারক নিয়োগের পর মামলা বিষয়ে জানতে হয়, দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে সময় লাগে।”
ওবায়দুল হাসান আরও বলেন, “একটি পরিসংখ্যানে দেখেছি, তারা প্রতি বছর নতুন দায়ের করা মামলা ৮০ শতাংশ শেষ করতে পারেন। বাকি ২০ শতাংশ থেকে যায়। যদি মামলার প্রবণতা না কমে তাহলে মামলা কোনো দিন শেষ হবে না। সমাজে কোনো ঘটনায় দ্রুত মামলা না করে সামাজিক সালিশ ও বিচারের মধ্য দিয়ে মীমাংসা করলে কমে যাবে। আগের দিনে মানুষ সমাজে বিচার-শালিসের মাধ্যমে ঘটনা নিষ্পত্তি করত। তুচ্ছ ও সাধারণ ঘটনা নিয়ে আমরা মামলা করব না। তাহলে কিন্তু মামলার সংখ্যা কমে আসবে। সেজন্য সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।”
বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগারের এক-দুটি ছাড়া প্রায় সবগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেছে জানিয়ে ওবায়দুল হাসান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিন্তা করলেন যে, এ দেশের সব মানুষের আইনের আশ্রয়ের অধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার প্রয়োগ করতে মানুষ আসেন। সেই কষ্ট দূর করতে এ বিশ্রামাগার নির্মাণ করেছেন। সারা দেশে ৬৪ জেলায় এ বিশ্রামাগার নির্মাণের প্রজেক্ট হাতে নেন প্রধানমন্ত্রী। এক-দুটি ছাড়া প্রায় সবগুলো হয়ে গেছে। এ বিশ্রামাগারে বিচারপ্রার্থীরা এসে সময় কাটাতে পারবেন। আগে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্রামাগার ছিল না। বিচারপ্রার্থী এসে বাড়ি চলে যেত। কোথাও বসার জায়গা ছিল না। এখন তারা ইচ্ছা করলেই বসে বিশ্রাম নিতে পারবেন। অনেক সময় বিচার কাজ হতে দেরি হয়, সেক্ষেত্রে এ বিচারপ্রার্থীরা বিশ্রামাগারে বসে সময় কাটবে।”
এ সময় নাটোর জেলা ও দায়রা জজ (বিচারক) অম্লান কুসুম জিষ্ণু, নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা, পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, নাটোর জজ কোর্টের পিপি মো. সিরাজুল ইসলাম, নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন টগর, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মশিউর রহমানসহ জেলার সব কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।