• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ কি আসছে? এই নাম কে দিল


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম
ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ কি আসছে? এই নাম কে দিল
ছবি : সংগৃহীত

মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। সেই লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে সেটি বাংলাদেশের উপকূলেই আঘাত হানবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এবারের ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে এর নাম হবে ‘ডানা’।

শুক্রবার থেকে রাজধানীর আকাশও মেঘলা। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবারও বিচ্ছিন্নভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। তবে এর রেশ যেতে না যেতেই আগামী মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। সেই লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা আছে।

চলতি অক্টোবর মাসের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে গত বুধবার থেকেই সাগরে একটি লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাব বেশি পড়ে ভারতের তামিলনাড়ু উপকূলে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। গতকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়। আজ বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বেশি।

শনিবারও দেশের কিছু স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে রোববার থেকে বৃষ্টি অনেকটাই কমে যাবে। মঙ্গলবার থেকে বঙ্গোপসাগের একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে আজ শুক্রবার সকালে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এই লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ এমনকি ঘূর্ণিঝড়ও হতে পারে।

সাগরে ঘূর্ণিঝড় হলে এর লক্ষ্যস্থল কি বাংলাদেশের উপকূল? এর জবাবে ওমর ফারুক বলেন, এখনো এটি নিশ্চিত নয়। এখন পর্যন্ত এর যে গতিপ্রকৃতি, তাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বা ওডিশার দিকেই এটি আঘাত হানতে পারে। তবে নিশ্চিত করে এখনই বলা যায় না। বাংলাদেশের উপকূলে আসার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

এবারের সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডানা’। এটি কাতারের দেওয়া নাম বলে জানান ওমর ফারুক।

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন
একটা সময় ছিল যখন ঘূর্ণিঝড়ের কোনো নাম থাকত না। আমাদের দেশে ১৯৭০ সালে কিংবা ১৯৯১ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়ে গেছে। কিন্তু সেগুলোর কোনো নাম নেই। শুধু আমাদের দেশের নয়, অন্যান্য দেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়েরও কোনো নাম থাকত না। তাই এসব ঝড়ের নাম রাখার একটি চল শুরু হয় একপর্যায়ে। কারণ, নামবিহীন থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি, ধরন সম্পর্কে তথ্য দ্রুত জানা যায় না। এর আঘাত হানার সময় বা তারিখ বের করে পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে হয় আবহাওয়াবিদদের। আর এটি করে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও )। ডব্লিউএমও সে জন্য পাঁচটি বিশেষ আঞ্চলিক আবহাওয়া সংস্থার (আরএসএমসি) সঙ্গে সমন্বয় করে ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করেছে। আরএসএমসি তার সদস্যদেশগুলোর কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়ে থাকে। তালিকা পেলে দীর্ঘ সময় যাচাই-বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ডব্লিউএমওর কাছে পাঠায়।

বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা অনুমোদন করে আঞ্চলিক কমিটির একটি প্যানেল। তার নাম ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস। এর মধ্যে আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৮ সালের আরএমএসসি নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা করে। এ সময় ১৩টি দেশ ১৩টি করে নাম দেয়। নামকরণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মেনে চলা হয়। যেমন রাজনীতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি বা লিঙ্গনিরপেক্ষ হতে হবে নামগুলোকে। বিশ্বের কোনো অঞ্চলের কোনো মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে, এমন নাম দেওয়া যাবে না। নাম রূঢ় হতে পারবে না। এটি সংক্ষিপ্ত ও সহজে উচ্চারণ করা যায়, এমন হতে হবে। সর্বোচ্চ আটটি বর্ণ থাকতে হবে ওই নামে। নাম দেওয়ার পাশাপাশি এখানে উচ্চারণও দিয়ে দিতে হবে।

Link copied!