• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৫৬৩ কোটি টাকার সার ও ডাল দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘ক্রয় কার্যক্রম’ শুরু


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০৩:৩৪ পিএম
৫৬৩ কোটি টাকার সার ও ডাল দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘ক্রয় কার্যক্রম’ শুরু
সার ও ডাল। ফাইল ফটো

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ৫৬৩ কোটি ৫৩ লাখ ২৬ হাজার ৮০০ টাকায় ৯০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার ও ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ের ৪ ক্রয় প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এটা বর্তমান সরকারের প্রথম ক্রয় কার্যক্রম।

বুধবার (২৮ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সূচনা বক্তব্য দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিবকে সভা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, “সার ও মসুর ডাল ক্রয় আমরা অনুমোদন দিয়েছি। এটা অতিদ্রুত করতে হবে। কারণ সারের সরবরাহ আমরা কোনোভাবেই কমতে দেবো না। আর অত্যাবশ্যকীয় জিনিসের মধ্যে মসুর ডাল খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আজকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সার ক্রয় ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মসুর ডাল ক্রয়। আমরা অনুমোদন দিয়েছি। এর জন্য যা অর্থকড়ি লাগে, সেটা ফরেন কারেন্সিতে হোক, আমরা দেবো। এটা দ্রুতই করতে হবে।”

অতীতে দেখেছি, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে অনেক কিছু কেনা হতো। আপনারা কি এটি অব্যাহত রাখবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে আজ আলোচনা হয়নি।”

সার সংকট হচ্ছে না, এমনটি কি বলা যায়-একজন সাংবাদিক এমন প্রশ্ন করলে সাহেলউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা অতিদ্রুত সার কেনার তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছি।”

সভা সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের ১৪ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার অনুমোদনক্রমে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির ১১তম লটের মেয়াদ ইতোমধ্যে উত্তীর্ণ হলেও পুনঃনির্ধারিত তারিখ আগামী ৬-১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রয়েছে। আরব আমিরাতের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৩ লাখ ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২১ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের মূল্য ৩৪৪ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।

কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্রানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, কাফকো, বাংলাদেশ হতে ৫ দশমিক ৪০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য প্রাইস অফার পাঠানোর অনুরোধ করা হলে কাফকো, বাংলাদেশ প্রাইস অফার পাঠায়।

কাফকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, সারের মূল্য নির্ধারণ করে দ্বিতীয় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৩২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ৯৯ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১৭ কোটি ৭৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে প্রথম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০২৪ সালের ১১ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার অনুমোদনক্রমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে কাতার থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৫ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কাতারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৩৩৯ দশমিক ১৭ মার্কিন ডলার হিসেবে প্রথম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের মোট মূল্য এক কোটি ১ লাখ ৭৫ হাজার ১০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২০ কোটি ৬ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকা।

সভায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ৩টি দরপ্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান নাবিল নব ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড এই ডাল সরবরাহ করবে ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ক্রয়ে প্রতি কেজি ১০১ দশমিক ৮৬ টাকা হিসেবে মোট ব্যয় হবে ২০৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

Link copied!