সোমালিয়ান জলদস্যুদের কাছ থেকে ১৭ জন ক্রু সদস্যসহ একটি জাহাজ উদ্ধার করেছে ভারতের নৌবাহিনী। অভিযানে জাহাজটিতে থাকা ৩৫ জন জলদস্যুও আত্মসমর্পণ করেছেন। জাহাজ উদ্ধারের এই খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যাচাই না করে অনেকেই ধারণা করছেন, উদ্ধার করা জাহাজটি ভারত মহাসাগরে ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ জলদস্যুর কবলে পড়া ‘এমভি আবদুল্লাহ’। এ তথ্যটি সঠিক নয়।
উদ্ধার করা জাহাজ প্রসঙ্গে ভারতীয় নৌবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ভারতীয় নৌবাহিনী সোমালি জলদস্যুদের হাইজ্যাক করা একটি পণ্যবাহী জাহাজ জব্দ করেছে এবং ১৭ জন ক্রু সদস্যকে উদ্ধার করেছে। মাল্টিজ-পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েনে অবস্থানরত ৩৫ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন এবং জাহাজটিতে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং মাদক আছে কি না তা পরীক্ষা করা হয়েছে।”
এ নিয়ে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এমভি রুয়েন গত বছরের শেষের দিকে হাইজ্যাক হয়েছিল এবং ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, তারা প্রথমে জাহাজটিকে গত শুক্রবার আটক করে।”
এদিকে ভারত মহাসাগরে ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ জলদস্যুর কবলে পড়া বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো কূলকিনারা হয়নি। গত মঙ্গলবার ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজটিকে জিম্মি করে জলদস্যুরা। পরে সোমালিয়ার উপকূল থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটিকে নোঙর করা হয়। শুক্রবার (১৫ মার্চ) সোমালিয়ান দস্যুরা সেটিকে নিয়ে অজানা গন্তব্যের দিকে রওনা হয়।
২০১৮ সাল পর্যন্ত এক দশক ধরে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক জলপথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে রেখেছিলেন সোমালি জলদস্যুরা। এরপর তাদের কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়লেও গত বছরের শেষের দিক থেকে তাদের আক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করে।
মূলত ২০১৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে এডেন উপসাগর এবং ভারত মহাসাগরে ছিনতাই বন্ধ করে সোমালি জলদস্যুরা। এরপর থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে মাল্টিজ-পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন হাইজ্যাক করাই ছিল তাদের প্রথম সফল ছিনতাই।
সেই ঘটনার পর কয়েক মাস পার হলেও রুয়েনের অপহৃত ক্রুদের মুক্তিপণ পরিশোধ করা হয়নি বলে ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম অ্যামব্রে জানিয়েছিল। এছাড়া জলদস্যুরা চিকিৎসার কারণে একজনকে ছেড়ে দিলেও ১৭ জন ক্রুকে ধরে রেখেছিল বলে মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল।