• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিজয়ের শোভাযাত্রায় আ. লীগের লাখো নেতা-কর্মী


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২২, ০৬:৩০ পিএম
বিজয়ের শোভাযাত্রায় আ. লীগের লাখো নেতা-কর্মী

একাত্তরের মতোই বিজয়ের আনন্দে মেতেছিল আওয়ামী লীগের লাখো নেতাকর্মী, সমর্থক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন পেশা-শ্রেণির মানুষ। এই বিজয় শোভাযাত্রার শুরু থাকলেও যেন শেষ নেই। এককথায় বলতে গেলে বিজয় শোভাযাত্রায় রাজধানীতে লাখো মানুষের স্রোত নামিয়ে বড় ধরনের শোডাউন করেছে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগ।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রা শুরুর আগে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সমাবেশ শেষে বিজয় শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে লাখো মানুষের স্রোত নামিয়ে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা করেছে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগরীর ১৫টি নির্বাচনী এলাকা, ৪১টি থানা এবং শতাধিক ওয়ার্ড থেকে বহু মিছিলের স্রোত এসে মিশেছিল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে। পুরো রাজধানীই পরিণত হয়েছিল মিছিলের নগরীতে। ৫১ বছর আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে স্থানে পাকিস্তানি হানাদাররা আত্মসমর্পণ করেছিল, ঠিক সেই স্থানটির সামনে থেকেই শোভাযাত্রা শুরু করে আওয়ামী লীগ। বিজয় শোভাযাত্রা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হয়।

এদিন বিকাল পৌনে চারটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিজয় র‌্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ, কাঁটাবন, বাটার মোড়, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, মিরপুর রোড হয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে এসে শেষ হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই বিজয় র‌্যালিতে অংশ নেওয়া সকল মানুষের কণ্ঠে ছিল একই দাবি— ‘বিজয়ের এই দিনে, মুজিব তোমায় মনে পড়ে’, ‘মুজিবের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘জামায়াত-শিবির-রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মোড়ে দুটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে শুরু হয় বিজয় শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশ। সমাবেশ থেকে দেশবিরোধী সকল অপশক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জাতীয় নেতারা। তারা বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশবিরোধী চক্র নানা ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিয়ে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনব।

বিজয় মিছিলে লাখো মানুষের স্রোত

প্রতিবারের বিজয় মিছিলের চেয়ে এবার ছিল ভিন্ন আমেজ। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডের কমিটিকে সামনে রেখে নিজ নিজ শক্তির মহড়া দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। পিছিয়ে ছিলেন না সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরাও। পাড়া-মহল্লা, থানা-ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যোগ দেন বিজয় মিছিলে। যুবলীগের পতাকা ও মাথায় ক্যাপের মিছিল দৃষ্টি কাড়ে সবার।

ঢাকা-২ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস, ঢাকা-৩ আসনের এমপি নসরুল হামিদ, ঢাকা-১১ আসনের এমপি একেএম রহমতুল্লাহ, ঢাকা-১৩ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান খান, ঢাকা-১৫ আসনের এমপি কামাল আহমেদ মজুমদার, ঢাকা-১৬ আসনের এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, ঢাকা-১৮ আসনের এমপি হাবিব হাসানের শোডাউন ছিল চোখে পড়ার মতো। এমপিদের পাশাপাশি শোডাউনে দিতে দেখা গেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলর, বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ডের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী সাবেক নেতাদেরও। এর মধ্যে অর্ধশত মিনি ট্রাক নিয়ে শোডাউন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিক, অর্ধশতাধিক ঘোড়ার গাড়ি এবং হাতি নিয়ে শোডাউন করেন ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন, নানা রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বড় শোডাউন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মো. সাইদুল ইসলাম মাদবর, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী, ঢাকা উত্তর সিটির ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রকৌশলী তৈমুর রেজা খোকন, ২৪ টি প্রিকাপভ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সাজিয়ে বিজয় মিছিলে অংশ নিয়েছেন ৬৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিন। মিনি ট্রাকে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অসংখ্য কাগজের কামান, ট্যাঙ্ক, যুদ্ধাস্ত্র হাতে নিয়েও শামিল হয়েছিলেন ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল, ৩২টি পিকাপভ্যানে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণের ডামি দৃশ্যও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শোভাযাত্রায় অংশ নেন ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আশিকুর রহমান চৌধুরী লাভলু, লাল-সবুজের বিশাল পতাকা নিয়ে শোডাউনে যোগ দেন শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নেতৃত্বে বিশাল পতাকা মিছিল করে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। এছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। আলেয়া সরোয়ার ডেইজী ও শারমিন সুলতানা লিলির নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগ, কামরুল হাসান রিপন ও তারিক সাঈদের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিশাল শোডাউন করেন।

Link copied!