১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা দাবি করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
শুক্রবার (৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আব্দুল মঈন খান বলেন, “১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আওয়ামী লীগ দাবি করেছিল। সঙ্গে ছিল জামায়াতে ইসলামী। তখন জামায়াত জোরদার দল ছিল, এখন ততটা নাই। জামায়াত যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করেছিল, আওয়ামী লীগ হাইজ্যাক করে নিয়ে গেছে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১৯৯৬ সালে হালাল ছিল, আজ তা কেন হারাম হয়ে গেল?”
মঈন খান বলেন, “জনগণের দাবির মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া জনগণের নেত্রী। তিনি পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেন নাই। তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন সামনে দরজা দিয়ে। ৮ বছর রাজপথে রাজনীতি করে রাজনীতিতে এসেছিলেন।”
মানুষ যেভাবে চায়, সেভাবে সংবিধান লিখিত হবে বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “মানুষের প্রয়োজনে স্বাধীনতার পর থেকে বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের সংবিধান বারবার লিখিত হয়েছে, পুনঃলিখিত হয়েছে এবং তা হতে থাকবে। মানুষের প্রয়োজনে যেভাবে সংবিধান তৈরি করতে হয়, ঠিক সেভাবে করতে হবে।”
সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, “তারা আবোলতাবোল কথা বলছে। আজ একজন বলে খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন, কাল আরেকজন বলে করতে পারবেন না। পরশু একজন বলে রাজনীতি করতে পারবেন, তারপরের দিন আরেকজন বলে করতে পারবেন না।”
মঈন খান বলেন, “আওয়ামী লীগ উপলব্ধি করেছে, দেশের মানুষ খালেদা জিয়কে ভালোবাসেন। হুমকিধমকি দিয়ে, মানুষ হত্যা করে, মানুষ গুম করে ক্ষমতায় থাকা যেতে পারে, কিন্তু দেশের মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। তারা ১৪-১৫ বছর ক্ষমতায় আছে, আরও কত দিন ক্ষমতায় থাকবে তা জানি না, কিন্তু একটি কথা আমি বলতে চাই, পৃথিবীর ইতিহাস আপনারা অবলোকন করুন। কোনো স্বৈরাচার, বিরোধী সরকার চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে না।”
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারকে একদিন-না-একদিন বিদায় নিতে হবে। এই সরকারকে এই দেশের মানুষ আর দেখতে চায় না। আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমরা লগি-বৈঠার রাজনীতি করি না। অনেকেই অভিযোগ করে বিএনপি কিছু করতে পারে না। অভিযোগ করুক আর যা-ই করুক- আমরা হিংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমরা নিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী।”
‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’র উদ্যোগে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সংগঠনের উপদেষ্টা ঢালি আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাম্মি আক্তার, বিলকিস জাহান শিরিন প্রমুখ।