বইমেলার শিশু প্রহরের একদিকে চলছে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সিসিমপুর। অন্যদিকে চলছে শিশুদের বই বেচা-কেনা। সিসিমপুরের টুকটুকি, হালুম, শিকু আর ইকরি শিশু চত্বরে এলেই আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে নেচে উঠছে শিশুরা। তার সঙ্গে সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভিভাবকরাও সঙ্গ দিচ্ছেন।
শনিবার (২ মার্চ) ছিল অমর একুশে বইমেলা ২০২৪ এবং শিশু প্রহরের শেষ দিন। শেষ দিনের উপচে পড়া ভিড়ে সন্তান আর অভিভাবকদের ছোট ছোট এই আনন্দের মূহুর্তগুলো ছিল বেশ উপভোগ্য।
মেলায় আবু সাঈদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়। তিনি এসেছেন রাজধানীর মুগদা থেকে। তিনি বলেন, “রাজধানীতে শিশুরা যে জীবনযাপন করছে তা বন্দী জীবনের মতোই ধরা চলে। কারণ, রাজধানীতে শিশুদের খেলার জায়গার খুবই সংকট। আমার মেয়েকে আজকে নিয়ে এসেছি বই মেলায়, সে উপভোগ করেছে সিসিমপুরে আর আমি উপভোগ করেছি তার আনন্দ। বাড়ির বাইরে খেলতে বেড়িয়ে তার আনন্দের যেন সীমা নেই।”
শুধু আবু সাঈদ নয়। তার মতো অনেক অভিভাবকদের অভিযোগ প্রায় একই রকম। তাদের মতে, রাজধানীতে শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই শিশুদের খেলার মাঠ। এরই মাঝে আবার কারো প্রত্যাশা পরবর্তী বছরে শিশু প্রহরের আয়োজন করা হোক তিন দিন।
শিশুদের জন্য খেলাধুলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যা একটি শিশুর মানসিক এবং শারীরিক বিকাশে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। ঠিক সেই স্থলে রাজধানীতে খেলার মাঠের সংকুলান, শিশুদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে বলে অভিযোগ করছেন অভিভাবকরা।
রবিউল ইসলাম টিটু নামের এক অভিভাবক বলেন, “সরকারি অনেক খাস জমি রয়েছে। সেখানে হয়তো মার্কেট হচ্ছে। কিন্তু খেলার মাঠ হচ্ছে না। খেলার মাঠ যে নেই, সেটাও বলব না। তবে যা আছে পর্যাপ্ত নয়। সরকার রয়েছে, সিটি করপোরেশন রয়েছে তারা দায়িত্ব নিলেই সবকিছু সম্ভব হবে।”
শান্তিনগর থেকে মেয়েকে নিয়ে মেলায় আসা আব্দুল আহাদ বলেন, “মেয়ের বয়স ৩ বছর। এই বইমেলা তার জীবনে প্রথম। সে এসে অনেক খুশি। একা একা হেঁটে ঘুরছে, দৌঁড়াচ্ছে। শিশুদের মানসিক বিকাশে শিশু প্রহরের আয়োজন কাজে আসবে। আগামী বছর থেকে শিশুদের আয়োজন তিন দিন করা না গেলেও সময়টা বাড়াতে পারলে ভালো হয়। শুরুটা বেলা ১১টা না করে, সকাল ৮ টায় করে দিলে ভালো হয়। কারণ ঢাকার পরিবেশ কিন্তু দিন দিন খারাপ হচ্ছে। শিশুদের খেলার জায়গা কম, দূষিত বায়ু আরও অনেক কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই দিক শিশু প্রহরের একটু বেশি সময় কাটাল সন্তানরা।”