বাজেট যত বিদেশি সাহায্য নির্ভর, তত সরকার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ। তিনি বলেছেন, “বিদেশ থেকে না নিয়ে যদি স্থানীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, তাহলে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর ঋণ এবং ফান্ড কমে যাবে।”
রোববার (২৮ মে) একটি জাতায় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।
বাজেট প্রসঙ্গে এম এম আকাশ বলেন, “বাজেট তো বড় হবেই, কিন্তু বড়-ছোট নিয়ে আগে বিতর্ক হতো, এখন বড় বাজেট হবে তা সবাই ধরেই নিয়েছে। কিন্তু বড় বাজেটটা কি অধিক বিদেশী সাহায্যনির্ভর হবে, নাকি স্থানীয় সম্পদ সংগ্রহ করে হবে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।”
বেসরকারি খাত ও সরকারের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “অনেক সময় আমরা বলি ক্রাউডিং অ্যাফেক্ট হবে। তার মানে, স্থানীয় রিসোর্স বাড়াতে হবে। স্থানীয় রিসোর্স বাড়াতে হলে করের হার বাড়িয়ে হবে না, আয়কর যেসব জায়গা থেকে আরও সংগ্রহ করা উচিত কিন্তু করা যাচ্ছে না। যেমন অতিউচ্চ ধনীদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য টার্গেট করে প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে হবে। আর যদি ভ্যাটের মাধ্যমে বাড়াতে চায়, তাহলে ভ্যাট বাড়ালে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং এ জটিল সমীকরণ এ বাজেটে মেলাতে হবে।”
তিনি বলেন, “যাতে দেশীয় সম্পদের পরিমাণ আপেক্ষিকভাবে বৃদ্ধি পায়, অথচ অপরোক্ষ সাধারণের ওপর ট্যাক্স বৃদ্ধি না পায়, বিদেশী ঋণের চেয়ে স্থানীয় ঋণ গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং স্থানীয় ঋণ যখন সরকার নেবে, তখন যেন ক্রাউডিং অ্যাফেক্ট না হয়, অন্তত ছোট, মাঝারি ও মাইক্রো এন্টারপ্রাইজগুলোর ঋণ ফান্ড যাতে থাকে এসব দেখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বৃহৎ প্রকল্পগুলোর জন্য সরকারকে হয়তো টাকা নিতেই হবে, কিন্তু তখন এটাও দেখতে হবে মেগা প্রকল্পের ব্যয় যেন ১ টাকারটা ৩ টাকা না হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় অগ্রাধিকার দিয়ে বাড়াতে হবে।”
সূত্র : বণিক বার্তা