ঢাকা শহরকে আবার সবুজ ছায়ায় ছেয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, “এক সময় সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামলা সবুজ বাংলাদেশ নামে এই দেশের খ্যাতি ছিল। এখন আর এটা নাই। আমরা গাছ কেটে বনভূমি উজার করে ফেলছি। আমরা প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে মাটি দূষিত করে ফেলছি। গাছ পালা কমে যাওয়ায় শ্যামল ছায়া আর দেখতে পাওয়া যায় না। সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ থেকে দূরে সরে গেছে। এগুলো এখন আমাদের কাছে ইতিহাস মনে হয়। ঢাকা শহরে পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ রোপণের মধ্য দিয়ে সেই ইতিহাসকে সামনে নিয়ে আসতে চাই। আবার ঢাকাকে সবুজ ছায়ায় ছেয়ে দিতে চাই।”
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাজধানীর মহাখালীর এ কে খন্দকার সড়কে ডিএনসিসি ও বন অধিদপ্তরের যৌথভাবে বৃক্ষরোপন অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “পরিকল্পিত বৃক্ষ রোপণের মধ্য দিয়ে ঢাকাকে আবার সবুজ শ্যামল নয়নাবিরাম ঢাকায় পরিণত করা হবে। এক সময় এই ঢাকা ছিল গাছপালায় ভরপুর। মাটি ছিল উর্বর। নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবতে গিয়ে বনভূমি উজার করে ফেলেছি। এখন রাস্তায় বেরুলে আর আগের মতো ছায়া পাই না। বিশুদ্ধ অক্সিজেন হাব কোথাও নেই। অসহ্য তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকি। প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে।”
মেয়র বলেন, “আমি দাবি জানিয়েছিলাম যারা সুষ্ঠুভাবে ছাদ বাগান করবে সেই সব বাসার মালিকদের ১০ শতাংশ হারে হোল্ডিং টেক্স ছাড় দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেই সুবিধা এখন সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে দিচ্ছে। এটি একটি যুক্তকারী সিদ্ধান্ত।”
তিনি বলেন, “আমাদের বাঁচার একটাই পথ। তা হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে। যেখানেই ফাঁকা জায়গা সেখানেই বৃক্ষ রোপণ করে পরিচর্যা করতে হবে। এভাবে আগাতে থাকলে ঢাকা হবে আবার সেই ‘সবুজ ঢাকা’ এবং একটি পরিপূর্ণ অক্সিজেন হাব।”
যে কোনো পরিস্থিতিতে ডিএনসিসিসহ যে কোনো সংস্থাকে আর একটি গাছও না কাটার আহ্বান জানান মেয়র আতিক। তিনি বলেন, “কোনো কাজের জন্য গাছ কাটার দরকার হলে আসুন আমরা বসি। আলোচনা করি। বাস্তবতা বিচার করি। মনে হলো আর গাছ কেটে ফেললেন। এটা করা যাবে না।”
মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “রোদ-বৃষ্টি এডিস মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযুক্ত সময়। আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, বাসা-বাড়ির আঙ্গিনায় কোথাও পানি জমে থাকছে কি না। ফুলের টব, খালি বোতল, দই আইক্রিমের কাপ, পরিত্যক্ত টায়ার, কোমড ও রঙের কৌটায় পানি জমে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।”
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক হোসেইন মোহাম্মদ নিশাদ, ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নুরুল করিম, সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম ও বন সংরক্ষক আর এস এম মনিরুল ইসলাম, ডিএনসিসির পরিবেশবিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন রশিদ জনি, মহাখালী ও গুলশান এলাকার কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান, মো. নাছির, হাসিনা বারী চৌধুরী, আমেনা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।