একের পর এক গ্রেপ্তার হচ্ছেন রাজনীতিবিদ, বিচারপতিসহ অনেকে। আদালত প্রাঙ্গণে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ থেকে শুরু করে তাদেরকে মারধরের ঘটনাও ঘটছে। পুলিশের সামনে এমন হেনস্তাকে চরম উদ্বেগের বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনের সময় মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় গত ২১ আগস্ট আদালতে নেওয়া হয় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে। সঙ্গে ছিলেন সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়।
পুলিশের ভেস্ট ও হেলমেট পড়া থাকলেও এজলাসে আনা-নেওয়ার সময় দীপু মনিকে লাঞ্ছিত করেন কয়েকজন আইনজীবী। তাকে কিল-ঘুসি মারতে দেখা যায়। ধাক্কাধাক্কিতে সিঁড়ি থেকে পড়েও যান সাবেক এ মন্ত্রী।
সিলেটের সীমান্তে আটক হওয়ার পর ২৪ আগস্ট আদালতে তোলার সময় হামলা হয় সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপরও। আদালত প্রাঙ্গণে কিছু ব্যক্তির বেধড়ক মারধরে গুরুতর আহত হন তিনি।
সবশেষ মঙ্গলবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে আদালতে আনা হলে পুলিশের সামনেই তাদের ওপর চড়াও হন একদল আইনজীবী। এ সময় তাদের উদ্দেশ্য করে ডিম ও জুতা ছুড়তেও দেখা যায় অনেককে।
আদালত এলাকায় আসামিকে এভাবে হেনস্তা করাকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলছেন মানবাধিকার কর্মীরা। এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও তাগিদ তাদের।
মানবাধিকবারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ~আমরা ভালোর জন্য তো পরিবর্তনটা করলাম। বিগত দিনের সরকার যেটা করেছে একই জিনিস যদি এখানেও করা হয়, তাহলে তো আর আমাদের পরিবর্তন হলো না। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটনাচ্ছেন তারা কিন্তু প্রকারান্তরে স্বৈরাচারের যে চেহারা, সেটাকেই পুনরাবৃত্তি করছেন। তারা জঘন্যকম কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছেন।"
এদিকে, আইনের শাসন নিশ্চিতে আদালতে আসামিদের নিরাপত্তার দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের। অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, “আদালত প্রাঙ্গণেও ফ্যাসিবাদের দোসররা এ ধরনের কার্যক্রম করে সবকিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। আমরা আইনের শাসন আছে এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশ আসলে জনগণের বাংলাদেশ হবে। সকল প্রতিষ্ঠান জনগণের হবে। এসব স্থানসহ অন্যান্য যে জায়গায় আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে সেখানে আমাদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে, আপনারা এসব বিষয়ে সুদৃষ্টি দেন এবং সমস্যাগুলো সমাধান করুন।”