স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি যদি ‘সেরকম’ হয়, প্রধানমন্ত্রী চাইলে তারা পদত্যাগ করবেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে শুরু হওয়া এই বৈঠক চলে প্রায় তিন ঘণ্টা।
সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে। তবে ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা এবং নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে আজ থেকে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। আর অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে কারফিউ শিথিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ওই চার জেলায় শনিবার পর্যন্ত সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। এই হিসাবে এসব এলাকায় এখন কারফিউ শিথিলের সময় দুই ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
এ সময় তার কাছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকার পরিস্থিতি তুলে ধরে এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন আন্দোলনকারীরা সম্প্রতি আপনিসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা স্বাভাবিক রাখতে আপনারা পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে ‘স্যাক্রিফাইস’ করবেন কি না?
এর জবাবে কামাল বলেন, “প্রয়োজন হলে সেরকম পরিস্থিতি যদি আসে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন, আমরা সব সময় দেশের জন্য কাজ করি সেটা করব।”
শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশ থেকে ’সরকার পতনের এক দফা’ ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ”এটা আর কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেই। ছাত্রদের আন্দোলনে নেই। রাজনৈতিক আন্দোলনে চলে গেছে। ছাত্রদের মিস লিড করে মিস গাইড করে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন অন্যদিকে নেওয়ার জন্য যারা প্রচেষ্টা নিয়েছে তারাই এ কাজ করেছে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এখন ছাত্ররা আন্দোলন থেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে চলে যাবেন।
অসহযোগ আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের প্রস্তুতি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা (আন্দোলন) নস্যাৎ করতে চাই না। আন্দোলনে যদি এ দেশের জনগণ যুক্ত হয়, তাহলে হবে।”
তখন একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন সে ক্ষেত্রে তারা (আন্দোলনকারীরা) কোনো আক্রমণের শিকার হবে না, সেটি কি নিশ্চিত? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এখন আপনাকে যদি মারে, তাহলে আপনি কি মার দেবেন না। আপনি কি বসে থাকবেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আত্মরক্ষার অধিকার দেওয়া আছে। আপনাকেও দেওয়া আছে। আপনাকে যদি কেউ আক্রমণ করে, আপনার প্রাণ রক্ষার্থে, সম্পদ রক্ষার্থে আত্মরক্ষায় যেতে পারেন। এটা আইনগত অধিকার।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, শনিবার পর্যন্ত ১৩৪ জন ছাত্র ও পরীক্ষার্থীর জামিন হয়েছে।