রাজধানীর লালমাটিয়ায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে লাঞ্ছনার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
সোমবার (৩ মার্চ) ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী লালমাটিয়ায় ওই ঘটনার স্থানে প্রতিবাদ জানান। পরে মিছিল সহকারে তারা জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন এবং তার অপসারণ দাবি করেন।
এর আগে শনিবার (১ মার্চ) লালমাটিয়ায় চায়ের দোকানে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে শারীরিক লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটে।
পরদিন বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি যতটুকু জেনেছি তারা (দুই তরুণী) নাকি সিগারেট খাচ্ছিল, কিছু লোক সেখান দিয়ে নামাজ পড়তে যাচ্ছিল। তারা বাধা দেওয়ায়, তাদের ওপর চা ছুড়ে মেরেছিল।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ। তাই সবাইকে অনুরোধ করব, কেউ যেন উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান না করে।”
ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে সোমবার ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে’র ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী লালমাটিয়ার ওই জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সেখানে তারা দুই তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
পরে তারা মিছিল সহকারে লালমাটিয়া এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে জড়ো হন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়। সেখানে তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। সেখান থেকে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি করেন তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদ্রিতা রায় বলেন, “আমাদের দুই বোন মবের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। শুধু এই ঘটনাই নয়, ৫ আগস্টের পর্ব থেকে সারা দেশ জুড়ে ছিনতাই, ডাকাতি, খুন, মবের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এখনো তা থামছে না। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাত ৩টায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘দেশ ঠিকঠাক আছে’। চোখ বন্ধ করে তার কথা শুনলে মনে হবে সে আওয়ামী লীগেরই কোনো মন্ত্রী।”
আদ্রিতা রায় আরও বলেন, “আমরা যারা গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম আমাদের কিছু আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর আমাদের বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা রাষ্ট্র, উপদেষ্টারা নিশ্চিত করতে পারেনি।”
প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া ইসলাম বলেন, “নির্যাতনের শিকার নারীরা যা করেছেন তা অপরাধ হলে সর্বোচ্চ সিভিল অফেন্স হয়। কিন্তু তাদের শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনা একটি ক্রিমিনাল অফেন্স (ফৌজদারি অপরাধ)। একজন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কীভাবে একটা ক্রিমিনাল অফেন্সকে জাস্টিফাই করেন?”