ভারতের কারণেই বাংলাদেশের হিন্দুরা বিপদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি বিজন কান্তি সরকার। “ভারত মায়াকান্না না করলে এ দেশের হিন্দুরা ভালো থাকবে। তারা মিথ্যা গুজব তৈরি করে মুসলমানদের কাছে হিন্দুদের সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করেছে।”
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম ও ধর্মান্ধ রাজনৈতিক কিছু ব্যক্তির বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার এবং ভারতীয় উগ্রবাদীদের বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিজন কান্তি সরকার বলেন, “বাংলাদেশের হিন্দুরা স্পেশাল কোনো খারাপ অবস্থার মধ্যে নেই। সারা দেশে হিন্দুরা অন্যান্য দেশবাসীর মতোই রয়েছে। মুসলমানদের যে অবস্থা, হিন্দুদের অবস্থা; তার থেকে বাড়তি কিছু নেই।”
কল্যাণ ফ্রন্টের সভাপতি আরও বলেন, “ভারতের সব দল ও গণমাধ্যম মিলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এ চক্রান্ত করছে। কারণ তাদের আওয়ামী লীগের পতন ভালো লাগেনি। এ কারণে ক্ষতি হচ্ছে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। ভারত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করছে।”
অতীতে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলার দায় আওয়ামী লীগের উল্লেখ করে বিজন সরকার বলেন, “আওয়ামী লীগ হিন্দুদের মন্দির ভাঙে, কোরআন শরিফ রাখে, গোলমাল লাগায়। আর মনে করে, মানুষ ভাববে জামায়াত-বিএনপি বোধ হয় এসব করাচ্ছে। সত্য তো মানুষ এখন জানে, কে আসলে কাজটি করেছে? এ জন্য আওয়ামী লীগ আজও এসব ঘটনার কোনো বিচার করেনি। যখন তদন্ত করে দেখে, লোকজন তাদেরই, এ নিয়ে চার্জশিট বিচার কিছুই হয় না।”
সংবাদ সম্মেলনে ভারত সরকার ও গণমাধ্যমের প্রতি পাঁচটি আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, সব ধরনের মিথ্যা গুজব প্রচার হতে ভারতের গণমাধ্যম ও ধর্মান্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে বিরত রাখতে হবে। কোনো ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠীর ভিত্তিতে নয়, প্রতিবেশী দেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তি হবে মানবতা। উভয় দেশের পারস্পরিক স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি সুরক্ষা ও সম্মান নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দলের বা মতের প্রতি অযৌক্তিক আনুকূল্য প্রদর্শন হতে ভারত সরকারকে বিরত থাকতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে ভারতীয় সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদীদের সব অপকৌশল বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে, সহসভাপতি অপর্ণা রানী দাস, রমেশ দত্ত, তপন মজুমদার প্রমুখ।