বিশ্বের উন্নত দেশেগুলোতে কারিগরি শিক্ষার হার বেশি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শনিবার (২৪ জুন) দুপুরে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এসএসসি-এইচএসসি কৃতিশিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় কৃতি শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এসএসসির ২০ ও এইচএসসি ২৫ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, “যে দেশ যত বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ হয়েছে, সে দেশে কারিগরি শিক্ষার হার তত বেশি। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে সমাজে এক ধরনের সামাজিক ট্যাবু আছে। সেই ট্যাবু দূর করতে হবে। দেশের প্রতিবছর লাখ-লাখ অনার্স-মাস্টার্স গ্রাজুয়েট তৈরি করছি। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে না। যারা ট্রেড কোর্সে পড়ালেখা করেছেন তারা অনেক আগেই কর্মজীবনে চলে যায়। তারা অনেক বেশি ভালো রোজগার করে। আমরা যেটা করার চেষ্টা করছি, কেউ যদি ট্রেড কোর্সে থেকে অন্য শিক্ষার পথে যাবে, সেই পথ আমরা খুলে দিচ্ছি। এই ব্যবস্থা ছিল না।”
দীপু মনি বলেন, “বাচ্চা যখন স্কুল থেকে বাসায় আসবে তাকে জিজ্ঞেস করবেন না তুমি কত নাম্বার পেয়েছো? জিজ্ঞেস করবেন, বাবা তুমি নতুন কি শিখেছো। আমাদের প্রত্যাশার চাপ বাচ্চাদের ওপর চাপিয়ে দিই। আমরা কেউ প্রকৌশলী হতে চেয়েছিলাম, হতে পারিনি। আমার সন্তানকে প্রকৌশলী বানাতেই হবে। বাচ্চা হতে চায় কি চায় না সেটা, ওর ইচ্ছা আছে বা নাই, আমরা জানতেও চাই না। সেটা জানা দরকার মনে করি না। আমরা বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছি। বাচ্চাদের জীবনের শুরুতে, কোনো একটি স্কুলে ভর্তি না হতে পারায়, বাচ্চারা নিজেদের অপরাধী ভাবে। আমরা একবারও ভাবি না, বাচ্চাটার জীবনের শুরুতে মানসিকভাবে ভঙ্গুর করে দিচ্ছি। আমাদেরকে ভাবতে হবে। সন্তানকে মানসিকভাবে চাপ দেবেন না। সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য অনেক অনেক জরুরি।”
যোগাযোগের দক্ষতার কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “জীবনের চলার পথে সবচেয়ে বেশি জরুরি যোগাযোগের দক্ষতা। আমি একটা বিষয় কথা বলছি, যা বুঝাতে চাইছি তা বোঝাতে পারছি কি না। সেটা বোঝানো খুবই জরুরি। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু জানে। কিন্তু তাদের যদি প্রশ্ন করা হয় তুমি কি জানো? তা নিজেদেরকে প্রকাশ করতে পারে না। যোগাযোগের দক্ষতা গড়ে উঠছে না তাই আমাদের শিক্ষাও ব্যবস্থাও এগোচ্ছে না। যেকোনো বিষয়ে সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করতে না পারলে, আমরা কোনো কিছু শিখতে পারবো না।”
অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন এসবিএসি ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী হাবিবুর রহমান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হারুন জয়নাল, সিনিয়র সদস্য সালাউদ্দিন লাভলু, বিএফইউজে সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, মুজিবুর রহমান, আমান উল্লা প্রমুখ।