বর্ষার শেষ সময়ে এসে বেড়েছে বৃষ্টির প্রবণতা। পূর্বাভাস অনুসারে, অক্টোবরেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, আজ ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
এ ছাড়া, রংপুর, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে বয়ে যেতে পারে দমকা হাওয়া, হতে পারে বজ্রপাত।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করা লঘুচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৈরী আবহাওয়া। তারা আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই মেঘ ভেসে এসে বৃষ্টি ঝরাচ্ছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পাঁচ বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে অধিদপ্তর। বিভাগগুলো হলো ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট।
ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, একদিনে ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ভারী এবং ৮৯ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে অতি ভারী বৃষ্টি বিবেচনা করা হয়।
এ ছাড়া, দেশের ১৭টি জেলার নদী অববাহিকায় দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাতাসের গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার।
জেলাগুলো হলো রংপুর, বগুড়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, ফরিদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী। নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এসব এলাকায় এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, সেপ্টেম্বরে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তবে রংপুর বিভাগে স্বাভাবিক এবং ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম।
তিনটি লঘুচাপ বৃষ্টির প্রবণতা বাড়িয়েছে। যার একটি গভীর নিম্নচাপ ও একটি স্থলনিম্নচাপে রূপ নিয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, ৫ সেপ্টেম্বর একটি লঘুচাপ সৃষ্টির পরবর্তী পাঁচ দিনে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে প্রায় সারা দেশেই বৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় লঘুচাপ সৃষ্টি হয় ১২ সেপ্টেম্বর। ১৪ সেপ্টেম্বর এটি যশোর ও পাশের এলাকায় গভীর স্থলনিম্নচাপে রূপ নেয়। এর প্রভাবে ওই এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে প্রায় সারা দেশেই বৃষ্টি ঝরে। সর্বশেষ ২৩ সেপ্টেম্বর পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। তবে পরবর্তী দুই দিনে এটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।