তাপপ্রবাহের ফলে রাজধানীতে বেশি ঝুঁকিতে থাকা ২৫টি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে এক গবেষণায়। গবেষকরা সেই এলাকাগুলোর নাম দিয়েছেন ‘হিট আইল্যান্ড’। যেখানে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রি থেকে ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে।
ক্রমাগত তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতার মধ্যে রাজধানী ঢাকার তাপদাহ নিয়ে জিআইএস সফটঅয়্যার ব্যবহার করে ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি অন হিট ওয়েভ ইন ঢাকা’ শীর্ষক গবেষণা চালানো হয়। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, জার্মান রেড ক্রস এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর যৌথভাবে চালানো এ গবেষণায় মহানগরের ‘হিট আইল্যান্ড’গুলো চিহ্নিত করা হয়।
ঢাকার হিট আইল্যান্ডগুলো হচ্ছে, বাড্ডা, গুলশান, কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, গাবতলী, গোড়ান, বাসাবো, টঙ্গী, শহীদনগর, বাবুবাজার, পোস্তগোলা, জুরাইন, হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কুর্মিটোলা, আজমপুর, উত্তরা, কামারপাড়া, মোহাম্মদিয়া হাউজিং, আদাবর, ফার্মগেইট, তেজকুনিপাড়া, নাখালপাড়া, মহাখালী। গবেষকরা বলছেন, প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস ঢাকা নগরীতে তাপপ্রবাহের প্রবণতা বাড়িয়ে তুলেছে ঘনবসতিপূর্ণ বসবাস, বড় বড় দালান, প্রচুর গাড়ি, অনেক কারখানা।
মূলত, বিশ্বজুড়েই তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ অংশেও তা ছড়িয়েছে। আর সে কারণেই ‘হিট ওয়েভের কন্ডিশন’ও বাড়ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ড. আব্দুল মান্নানের মতে, ঢাকা মহানগরীতে হিট ওয়েভের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। যেসব এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ, রয়েছে উঁচু ভবন, কারখানা সেসব এলাকায় সহনশীলতার বাইরে চলে যাবে ‘হিট ওয়েভ’।
হিট আইল্যান্ডগুলো ঢাকা ছাড়িয়ে জেলাগুলোতেও দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ড. আব্দুল মান্নান বলেন, দেশের কিছু সিটি করপোরেশন এলাকা যেমন খুলনা, বরিশাল এবং রাজশাহী হিট ওয়েভ কন্ডিশনের জন্য ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রচুর বৃষ্টিপাত আর স্থানীয় আবহাওয়াগত কারণে সিলেট তাপপ্রবাহের বাইরে থাকলেও এখন সেখানেও প্রতিবছর হিট ওয়েবের প্রবণতা বাড়ছে।
আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলেও তাপপ্রবাহের প্রবণতা দেখা না গেলেও এবার শুধু সীতাকুণ্ডই নয়, রাঙামাটি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৩৯.৩ ডিগ্রি পর্যন্ত। ড. আব্দুল আরও বলেন, এপ্রিল-জুলাই মাসে ‘হিট ওয়েভ’ ঘটে বেশি। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেও এ ধরনের প্রবণতা হয়ে থাকে। গেল বছরে সেপ্টেম্বরের শেষেও উত্তরাঞ্চলে অনেক জায়গায় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ছিল।