• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
গবেষণা

বোতলজাত সয়াবিন তেলে ক্ষতিকর ‘ট্রান্সফ্যাট’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০২:১৫ পিএম
বোতলজাত সয়াবিন তেলে ক্ষতিকর ‘ট্রান্সফ্যাট’
ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গেছে বোতলজাত সয়াবিন তেলে। ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলে সহনীয় মাত্রার বেশি ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া গেছে। এই ক্ষতিকর উপাদান দীর্ঘ মেয়াদে মানুষের উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস্ পি গ্র্যান্ট পাবলিক হেলথ স্কুল, ইনডিপেনডেন্ট ইউনির্ভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি) ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশনের (জিএআইএন) যৌথ গবেষণায় এসব চিত্র উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেশের বাজারের বিভিন্ন কোম্পানির বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংগৃহীত নমুনার প্রায় ৬৭ শতাংশের মধ্যে সহনীয় হিসেবে স্বীকৃত মাত্রার (২ শতাংশ) চেয়ে বেশি ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। খোলা সয়াবিন তেলের নমুনার ক্ষেত্রে এই হার অনেক কম, প্রায় ২৫ শতাংশ। আর পাম তেলের কোনো নমুনায় সহনীয় মাত্রার বেশি ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়নি।

গবেষণা জার্নাল ফুড কেমিস্ট্রি অ্যাডভান্সেসে চলতি মাসেই প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ এবং জুন-আগস্টে দেশের ৮টি বিভাগ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের তিনটি করে বাজার (একটি শহর ও দুটি গ্রামের) থেকে সংগ্রহ করে ১ হাজার ৫২১টি তেলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মোট ১০৬টি ‘কম্পোজিট বা গুচ্ছ’ নমুনার ভোজ্যতেল পরীক্ষা করা হয়।

এর মধ্যে ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেলের ১৮টি ‘কম্পোজিট’ নমুনা ও ৪৯টি খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান থেকে খোলা তেলের নমুনা রয়েছে। পাম তেলের ব্র্যান্ডের নমুনা নেওয়া হয় ১১টি (কম্পোজিট)। খোলা পাম তেলের নমুনা নেওয়া হয় ২৮টি (কম্পোজিট)। পরে পাঁচটি কারখানা থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

সংগৃহীত নমুনা ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইইউবি) পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়। গবেষণাটির ফলাফল নিয়ে ৭ জানুয়ারি ফুড কেমিস্ট্রি অ্যাডভান্সে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের ১৮টি ’কম্পোজিট’ নমুনার মধ্যে ১২টিতে সহনীয় মাত্রার বেশি ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গেছে। খোলা ড্রামজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে ১২টি ‘কম্পোজিট’ নমুনায় মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গেছে। পাম তেলের কোনোটিতে মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট পাওয়া যায়নি।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটি অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা করে। তা ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। সেখানে খাদ্যে এর সর্বোচ্চ মাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা গেছে, সয়াবিন তেলের নমুনায় গড়ে সহনীয় মাত্রার দুই থেকে চার গুণ বেশি ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গেছে। গবেষকেরা তেল উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেননি।

ট্রান্সফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য বেশ বিপজ্জনক। কারণ, এটি কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিনের পরিমাণ (এলডিএল) বৃদ্ধি করে এবং উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল) হ্রাস করে। এইচডিএলের চেয়ে এলডিএল বাড়লে করোনারি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। ২ শতাংশ টিএফএ বেশি গ্রহণ করলে করোনারি হৃদ্রোগের মাত্রা বাড়ে ২৩ শতাংশ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবারের ট্রান্সফ্যাট রক্তের ‘ভালো’ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং ‘খারাপ’ কোলেস্টরেলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। রক্তে অতিরিক্ত মাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ট্রান্সফ্যাট বেশি গ্রহণ করা হলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!