• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
বরাদ্দ নেই, তাই ছাঁটাই

আট হাজার কর্মচারীর মাথায় হাত


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৩, ০৩:২৭ পিএম
আট হাজার কর্মচারীর মাথায় হাত
ফাইল ছবি

তীব্র জনবল সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ রেলওয়ে চলতি মাসে প্রায় ৮ হাজার অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। এসব কর্মচারীর অনেকেই চাকরি স্থায়ীকরণের আশায় অনেক বছর ধরে কাজ করছেন। কেউ ৩ বছর আবার কারও ১০ বছর পার হয়ে গেছে অস্থায়ী চাকরিতে। অস্থায়ী এই চাকরিকালীন সময়েই নতুন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা পার হয়ে গেছে বেশির ভাগেরই।

অস্থায়ী কর্মচারীদের অভিযোগ, আইন অনুয়ায়ী নিরবিচ্ছন্নভাবে তিন বছর অস্থায়ী পদে কর্মরতদের রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না করে নতুন নিয়োগের পথে হাঁটছে রেলওয়ে। যে কারণে ক্ষুব্ধ দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত অস্থায়ী এসব শ্রমিক।

এ ছাড়া উচ্চ আদালতের অন্তত ছয়টি আদেশ রয়েছে রেলের অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ী করতে। অথচ রেলওয়ে তা করছে না।

সূত্র জানায়, চলতি বাজেটে (২০২৩-২৪) অস্থায়ী কর্মচারীদের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই, এই অজুহাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী কর্মচারীদের ছাঁটাই করেছে।

জানা যায়, রেলওয়েতে ৪৭ হাজার ৬৩৭ জনবলের অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে কর্মরত জনবল আছে ২৫ হাজার। বাকি প্রায় ২২ হাজার পদই শূন্য রয়েছে। তবু কেন অস্থায়ী কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না করে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে, এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নতুন করে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে অস্থায়ী কর্মচারীদের মাঝে। চরম হতাশা আর ক্ষোভে বিক্ষুব্ধ এসব শ্রমিকের স্বজনরা।

রেলওয়ে অস্থায়ী কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ও টিএলআর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এসব অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ী করতে আদালতের রিট পিটিশনের অন্তত ছয়টি রায় কর্মচারীদের পক্ষে এসেছে। এতে প্রায় এক হাজারের বেশি শ্রমিক রয়েছেন। আরও অন্তত ১৫টি মামলা আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায় অনুযায়ী, কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হলেও অজানা কারণে তা থেমে গেছে। তা বাস্তবায়ন না করে উল্টো রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের শ্রমিকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যমতে, আট হাজারের বেশি অস্থায়ী কর্মী গেট কিপার, পিম্যান, ওয়েম্যান, খালাসিসহ বিভিন্ন পদে কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। এদের মজুরি দেওয়া হয় দৈনিকভিত্তিতে। কারও ৫০০ কারও ৫৭৫ টাকা পর্যন্ত।

জানা যায়, রেলের জনবল সংকট দীর্ঘদিনের। এ কারণে চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতে টেম্পোরারি লেবার রিক্রুটমেন্ট-টিএলআর (কাজ নেই মজুরি নেই) ভিত্তিতে অস্থায়ী নিয়োগের মাধ্যমে চলেছে রেলের কার্যক্রম।

২০২০ সালে প্রণীত রেলের নিয়োগবিধিতে অস্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে আউটিসোর্সিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়। এ কারণে গত বছর হিসাব শাখা থেকেও টিএলআর কর্মচারী ছাঁটাই করে আউটসোর্সিং করা হয়। আউটসোর্সিং হলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাজে নিয়োজিত করা। যেন তারা পরবর্তীতে স্থায়ী চাকরির আবেদন বা দাবি তুলতে না পারে।

রেলেওয়ের টিএলআর (অস্থায়ী) ঐক্য ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, হাজার শ্রমিকের মাথায় হাত পড়েছে। ডেকে বলা হয়েছে, তাদের জন্য বাজেটে আর বেতন-ভাতার বরাদ্দ নেই। তিন চার মাস সময় লাগবে আউটসোর্সিংয়ে লোক নিয়োগ দিতে। এসময়টুকু কাজ করলেও তারা বেতন ভাতা পাবে না। কর্তৃপক্ষ বলছে, আউটসোর্সিং ঠিকাদারদের অনুরোধ করা হবে, তারা যাতে টিএলআর কর্মচারীদের আউটসোর্সিংয়েরে মাধ্যমে হলেও রাখে।

Link copied!