মহানগর ডিবি কার্যালয়ে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিম। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক)।
সেখান থেকে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আবারও আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.আক্তারুজ্জামান এ আদেশ দেন।
আইডিয়াল কলেজের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় গত ২ সেপ্টেম্বর একই আদালত হাজী সেলিমের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড চলা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। রাত পার হতে না হতেই সকালে তাকে আদালতে তোলা হলো।
রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি হাজী মোহাম্মদ সেলিম আদালতের আদেশ মোতাবেক পুলিশ রিমান্ডে প্রাপ্ত হয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে সতর্কতার সাথে মামলার ঘটনার বিষয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আসামির কাছ থেকে মামলার ঘটনার বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গোপন রেখে যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে। আসামি কথা বলতে পারেন না এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই তাকে গভীর ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
আসামির ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড হলেও তার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এবং সে কথা বলতে না পারায় তাকে রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনও তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব নয়।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে তাকে আপাতত আর জিজ্ঞাসাবাদ না করে জেল হাজতে আটক রাখা প্রয়োজন। মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিকে ভবিষ্যতে আরও রিমান্ডের প্রয়োজন হতে পারে। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে বিধায় মামলার তদন্তকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেল হাজতে আটক রাখা প্রয়োজন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই লালবাগের আজিমপুর সরকারি আবাসিক এলাকায় আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় তার বাবা কামরুল হাসান ১৯ আগস্ট লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও হাজী মোহাম্মদ সেলিমসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে রাজধানীর বংশাল থানাধীন এলাকা থেকে হাজী সেলিমকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গত ২ সেপ্টেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ থানার সাব-ইন্সপেক্টর আক্কাস মিয়া হাজী সেলিমকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ২০০৮ সালে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় ১৩ বছরের সাজা হয় হাজী সেলিমের। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে এই সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্ট।