• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩০, ১২ রমজান ১৪৪৬

অন্যের স্ত্রীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে খুন হন হাবীবুল্লাহ বাহারের উপাধ্যক্ষ সাইফুর


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৫, ০১:৫১ পিএম
অন্যের স্ত্রীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে খুন হন হাবীবুল্লাহ বাহারের উপাধ্যক্ষ সাইফুর
মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরখানে অন্যের স্ত্রীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে খুন হন হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ ১২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১২ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির উত্তরা জোনের ডিসি মো. মুহিদুল ইসলাম।

ঘটনার বিষয় তুলে ধরে মুহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত নাজেম ও রুপা দম্পতিকে ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪ দিন আগে রেল স্টেশনে পরিচয়ে সূত্র ধরে সাইফুর রহমান নিজ বাসায় আশ্রয় দেন ওই দম্পতিকে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে রুপাকে যৌন নিপীড়ন করতেন। দিয়েছেন তার স্বামীকে হত্যার হুমকিও।

ডিএমপির উত্তরা জোনের ডিসি জানান, গত ৯ মার্চ রাতে ঘুমের সময় রুপার ঘনিষ্ঠ হতে গেলে টের পেয়ে যান স্বামী নাজেম। এরপরেই সাইফুলের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাদের। একপর্যায়ে রুপা এবং নাজেম দম্পতি সাইফুর রহমানকে বটি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করে নিহতের ছোট ভাই।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভিকটিম সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গত ৩/৪ মাস ধরে সেই এলাকার একটি বাসায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতেন। সোমবার (১০ মার্চ ) বিকেলে বাদী সংবাদ পান তার বড় ভাইকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ধারাল অস্ত্র দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তার শয়ন কক্ষের ভেতর ফেলে রেখেছে।

এরপর স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় সকাল ৭টার দিকে তিনি মারা যান। উত্তরখান থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে ও ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠায়।

থানা সূত্র আরও জানায়, মামলাটি রুজুর পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে উত্তরখান থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এলাকা থেকে ফরিদপুর সদর থানা-পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত হতে দুটি মোবাইল, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার ২/৩ দিন আগে কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিকটিম মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তার মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার সুবাদে ভিকটিম গ্রেপ্তারদের তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া রুপা বেগম ওরফে জান্নাতিকে তার ফ্ল্যাটে আটক করে শারীরিক, মানসিক ও যৌননির্যাতন শুরু করে। গ্রেপ্তাররা নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত রাগ ও ক্ষোভ থেকে সোমবার (১০ মার্চ) রাতে ধারাল বটি দিয়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে উপর্যুপরি আঘাত করে। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তারদের বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েন মো. মুহিদুল ইসলাম।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!