• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাড়ছে রেমিট্যান্স কমছে বাণিজ্য ঘাটতি


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম
বাড়ছে রেমিট্যান্স কমছে বাণিজ্য ঘাটতি
ডলার। ফাইল ফটো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পথ ধরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে সরকারের বদল ঘটেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়স এখনো এক মাসও হয়নি। এমনিতেই গেল কয়েক মাস ধরে দেশের অর্থনীতির নানা সূচক নিম্নমুখী ছিল। তার মধ্যে সারা দেশে যে ব্যাপক সহিংসতা ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতির ওপর। নতুন সরকারের প্রথম অঙ্গীকারও হচ্ছে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করা।

ইতোমধ্যে সব শঙ্কা কাটিয়ে দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। প্রবাসীরা নতুন স্বপ্ন দেখছেন দেশ নিয়ে। সেজন্য তারা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো শুরু করেছেন। ফলে বৈধ চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়েও শঙ্কা কাটতে শুরু করেছে।

সূত্রমতে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ বিলিয়ন ডলার বেড়ে গেছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান হিসাব ঘাটতিও প্রায় ৪৪ শতাংশ কমে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। চলতি হিসাব, যেটিতে বাণিজ্য ব্যালেন্স (পণ্য রপ্তানি থেকে আমদানি বাদ), বিদেশ থেকে গড় আয় এবং গড় বর্তমান স্থানান্তর অন্তর্ভুক্ত– সেটি বৈদেশিক পেমেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “চলতি হিসাব ঘাটতি কমে যাওয়ার একটা অর্থ হলো আমাদের ব্যালেন্স অব পেমেন্টের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি করেছে। তবে আমরা এখনো স্বস্তির জায়গায় আসিনি। একটা সময় আমাদের চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত ছিল। ওই জায়গায় পৌঁছানোর আগে আমদানি খুব বেশি বাড়তে দেওয়া উচিত হবে না।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে অগ্রহণযোগ্য ব্যালেন্স বা ‘এরর অ্যান্ড অমিশন’ ২ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ১ বিলিয়ন ডলার কম।

এ বিষয়ে অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এরর অ্যান্ড অমিশন কয়েক বছর আগেও এত বেশি ছিল না। সংখ্যাটা এত বড় কেন হচ্ছে বা এর পেছনে কোনো যুক্তিসংগত কারণ আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রমতে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে মোট বৈদেশিক পেমেন্ট ঘাটতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৪৮ শতাংশ কমে ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। সাধারণত এই ঘাটতি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে পরিশোধ করা হয়। ফলে বিপিএম৬ নির্দেশনা অনুযায়ী, গত বছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ৩ বিলিয়নের ডলারের বেশি।

সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, রিজার্ভের ওপর চাপ কিছুটা কমলেও তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য হুন্ডি বন্ধ করা এবং পণ্য ও পরিষেবার রপ্তানি বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

মুস্তাফিজুর রহমানের মতে, স্বল্পমেয়াদে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পণ্যের পরিবহণ স্বাভাবিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং ব্যবসার খরচ কমানোর চেষ্টা করা উচিত। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দ্রুত করার এবং পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক ঋণ ছাড় করতে হবে। যা রিজার্ভ বাড়াতে এবং মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে।

Link copied!