গত ১৭ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশের উন্নয়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। চাহিদার তুলনায় উচ্চমাত্রায় এসব ব্যাংক ঋণ দেশের অর্থনীতিকে চেপে ধরেছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বুধবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক সংলাপের শুরুতে এ কথা বলেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
মূল প্রবন্ধে ফাহমিদা খাতুন বলেন, “রাজস্ব আহরণের অপর্যাপ্ততা, সরকারি ব্যয় সংকুলানে ব্যর্থতা, এডিপি বাস্তবায়নে শ্লথগতি, ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের উচ্চমাত্রায় ঋণ দেশের অর্থনীতিকে চেপে ধরেছে।”
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ, ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট, রপ্তানি আয়ে ধীরগতি, রেমিট্যান্স প্রবাহে মন্থরতা, ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগে স্থবিরতার মতো সমস্যাগুলোর দ্রুত অবসান করতে হবে। অর্থনীতির গতি আনতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবক্ষয়, আমদানিতে ক্রমহ্রাসমান প্রবণতা, টাকার ব্যাপক অবমূল্যায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যাগুলো সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।”
সামাজিক খাত পুনর্গঠনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বাভাবিক করা, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, শ্রমবাজারের চাহিদা ও দক্ষতার অসামঞ্জস্যতা দূর করার তাগিদ দেন ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, “শিক্ষা খাতের পুনর্গঠনের সঙ্গে কর্মসংস্থান, বিশেষত যুবকর্মসংস্থানের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে।”
সিপিডির একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, “যুব বেকারত্বের পেছনে অপ্রতুল চাকরির সুযোগ, শিক্ষার নিম্নমান এবং দক্ষতার অমিল, উদ্যোক্তা হওয়ার সীমিত সুযোগ, নারী চাকরিপ্রার্থীদের সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সুবিধার অভাবের মতো বিষয়গুলো রয়েছে। এ ছাড়া ঘুষ ও দুর্নীতির কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে আসা, অভিজ্ঞতার অযৌক্তিক প্রয়োজনীয়তা, সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা ও আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে যুবকদের বড় একটা অংশ বেকার থাকছেন।”
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য আগামী তিন মাসের ভেতর জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে হবে।”