ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস অফিস করতেন রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার নগর ভবনে। তবে তিনি থাকতেন উত্তর সিটির অভিজাত এলাকা বনানীতে। তার বাসা থেকে নগর ভবনের দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার।
তবে নগর ভবনে বসেই দুপুরে বনানীর বাসায় রান্নায় করা ভাত খেতেন তাপস। সেই ভাত আনার জন্য বরাদ্দ ছিল সরকারি একটা গাড়ি (ঢাকা মেট্রো খ ১২-০৩৯৬-সেডান কার)। গাড়ির চালক ছিলেন সিটি করপোরেশনের পরিবহন বিভাগের এক চালক। বনানী থেকে নগর ভবনে যাওয়া-আসায় গাড়িটি দিনে ২২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিত।
বনানী থেকে ফুলবাড়িয়ায় নগর ভবনে ভাত আনতে সেই গাড়ির জন্য জ্বালানি তেল (অকটেন) বরাদ্দ ছিল ২০ লিটার। এক লিটার অকটেনের দাম ১২৫ টাকা হিসেবে ২০ লিটারের জন্য ব্যয় হতো ২ হাজার ৫০০ টাকা। শুক্র ও শনিবার ছাড়া সেই গাড়ির জন্য মাসে বরাদ্দ ছিল ৪৪০ লিটার অকটেন।
সব মিলিয়ে বনানীর বাসা থেকে তাপসের দুপুরের খাবার আনতে মাসে খরচ হতো ৫৫ হাজার টাকা। যা বছরে গিয়ে দাঁড়ায় ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন ৫১ মাস। এই সময়ের মধ্যে শুধু তাপসের দুপুরের খাবার আনার জন্য গাড়ির জ্বালানি বাবদ সিটি করপোরেশনের ব্যয় ২৮ লাখ ৫ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রথম আলো। প্রতিবেদনে পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তারা বলছেন, প্রতি লিটার তেলে অন্তত ১০ কিলোমিটার চলতে পারে ওই গাড়ি। অথচ প্রতিদিন গাড়িটির জন্য ২০ লিটার করে তেল দেওয়া হতো।
পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গাড়িটির জন্য প্রথম দিকে (২০২০ সালের জুন থেকে) দিনে ২৬ লিটার তেল বরাদ্দ দেওয়া হতো। তবে গত বছরের শুরু থেকে বরাদ্দ ৬ লিটার কমিয়ে ২০ লিটার করা হয়। মেয়রের ভাত আনা ছাড়া গাড়িটি অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়নি।
বরাদ্দ করা বাকি জ্বালানি তেল কী করা হতো তা জানতে চাইলে গাড়িচালক নাজিরুল ইসলাম বলেন, মেয়রের দপ্তরের জরুরি কাজে বিভিন্ন স্থানে তাকে যেত হতো। যে কারণে দিনে ২০ লিটার তেলের পুরোটাই ব্যবহৃত হতো বলে দাবি করেন গাড়িচালক।