• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পোশাকশিল্পে অসন্তোষ দমনে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪, ০৩:২১ পিএম
পোশাকশিল্পে অসন্তোষ দমনে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

দেশের তৈরি পোশাকশিল্প ঘিরে চলমান অসন্তোষ দমনে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই বিক্ষোভের সঙ্গে প্রকৃত শ্রমিকেরা নয়, বহিরাগতরা জড়িত বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টারা।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

আসিফ মাহমুদ বলেন, “শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে আমরা মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে একাধিক সভা করেছি। আমাদের শিল্প উপদেষ্টা তিনিও কথা বলছেন। সকল শ্রমিক নেতাদের কাছ থেকে আমরা এটাই জানতে পেরেছি, এখন যে আন্দোলনগুলো হচ্ছে, শ্রমিক নেতারা এই আন্দোলনের প্রকৃতিটা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারছেন না।‌ কারণ এখানে কোনো নির্দিষ্ট দাবি উঠে আসছে না। ‌কোনো নির্দিষ্ট দফা পাওয়া যাচ্ছে না।”

“যারা সাধারণত শ্রমিক আন্দোলনগুলো করে থাকেন, তারাও সেখানে সেভাবে নেই। বহিরাগত লোকজনের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় মালিকপক্ষ বেতন দিতে দেরি করছে, এজন্য আন্দোলন হচ্ছে। কয়েকটি স্পেসিফিক ফ্যাক্টরি আছে সেখানে মালিকপক্ষ পালিয়ে গেছেন। ‌সেখানে কিছুটা অসন্তোষ হয়েছে। সেগুলো আমরা এড্রেস করছি, সেগুলোর জন্য সরকার সফ্টট লোন ঘোষণা দিয়েছে। সেটার পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হবে,” যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, তবে এই ছোট ছোট কয়েকটি সুনির্দিষ্ট জায়গায় অসন্তোষকে কেন্দ্র করে যে জায়গাগুলোতে ফ্যাক্টরি ক্লাস্টারগুলো আছে, সেখানে দেখা গেছে বহিরাগতরা এসে এবং বেকার যুব সংঘ নামে যারা কখনো শ্রম এরিয়ার মধ্যে কখনো আন্দোলন করেনি, গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‌শ্রমিক নেতারাই আমাকে বললেন যে তারা সেখানে হেঁটে এসেছেন এবং তারা দেখেছেন যে হেলমেট ও হাফপ্যান্ট পরা যারা টোকাই, যাদের টাকা দিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ভাড়া করা হয়। ‌ তাদেরকে সেখানে দেখা গেছে।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “আমরা শ্রমিক নেতাদের বলেছি, আপনাদের ন্যায্য দাবিগুলো নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে আলোচনা করতে হবে। আমি তো একদিনে বসে শ্রম আইন ঠিক করে দিতে পারব না। তারা বলেছেন শ্রমিকদেরকে তারা বোঝাবেন তাদের জায়গা থেকে। যারা বহিরাগত আছেন যাদের শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, শিল্পের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, তারা তাদেরকে আলাদা করবেন।”

তিনি আরও বলেন, “যারা ঝুট ব্যবসা নিয়ে সন্ত্রাস করছে, ‘আওয়ামী লীগের লোকেরা যে সিন্ডিকেটগুলো সামলাতো তারা তো সেগুলো ছেড়ে চলে গেছে, এখন যারা সেগুলো দখলের পাঁয়তারা করছে এবং সেখানে সন্ত্রাস করছে, তাদেরকে এবং যারা বহিরাগত আছেন তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে সেটা গতকাল বলেছি। স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগও আছে কিছু জায়গায়। কিছু স্থানীয় বিএনপি নেতারাও রয়েছেন বলে আমরা সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আমাদের এ বিষয়ে কথা হচ্ছে তারা যাতে তাদেরকে নিবৃত রাখেন। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী যে সকল আওয়ামী লীগ নেতা এখনো রয়ে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে যাব।”

উপদেষ্টা বলেন, ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সেটার ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে। সেখানে যে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে, সেটার জন্য পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

পরিস্থিতি কত দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন জানতে চাইলেও উপদেষ্টা বলেন, আজকে থেকে অ্যাকশন শুরু হবে, সেখানে ক্ষতি হয় এমন কোনো অ্যাকশন পুলিশ নেবে না। রাস্তাগুলো খালি করার জন্য যথাযথ অ্যাকশন নেবে। ‌ যারা ইন্ধন যোগাচ্ছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।

আজকের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে মনে করছেন জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের শ্রমিক নেতারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন, যে শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন তাদেরকে বোঝাবেন, তাদের সমস্যার সমাধানে আমরা আরও বৈঠক করব। সমস্যার সমাধানে মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ মিলে এগিয়ে যাব।

এর আগে, দেশব্যাপী পোশাকশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পে শ্রমিকদের অসন্তোষের বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যান হাসান আরিফ, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াসহ ছয়জন উপদেষ্টা। এ সময় চলমান পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা যেতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।

Link copied!