জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, “আজকে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, এই গণ-অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন তাদের স্বল্পমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন ও চিকিৎসা সেবার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন এবং বিভিন্ন অংশীদারদের নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমৃত্যু চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আন্দোলনে আহত যোদ্ধাদের একটি ইউনিক আইডি কার্ড থাকবে এবং এই আইডি কার্ডের মাধ্যমে আন্দোলনে আহতদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।”
সায়েদুর রহমান বলেন, “দেশের সকল সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থেকে তারা আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। এমনকি যে সকল বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হবে, সেখানে তারা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন এবং চিকিৎসা ব্যয়ভার আংশিক সরকার বহন করবে। ইতোমধ্যে আহতরা চিকিৎসার জন্য যে পরিমাণ যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন সেগুলা যথাযথ ডকুমেন্টেশন পাওয়ার পর তাদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। যারা পঙ্গুত্ব এবং অন্ধত্ব বরণ করেছেন তাদের প্রতি রাষ্ট্রের সমবেদনা এবং সহানুভূতি। কিন্তু আমরা সেখানে ক্ষান্ত নই।”
স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী বলেন, “প্রতিটি অন্ধ মানুষের জীবন পরিচালনার জন্য তার শিক্ষাগত যোগ্যতা, তার সামর্থ্যের সঙ্গে মিলিয়ে তাকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে তার পরিবারের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। যারা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন তাদের জন্য যে সকল মেশিন, চিকিৎসা সেবা এবং যে ধরনের যন্ত্রপাতি সহায়তা প্রয়োজন হয় তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।”
সায়েদুর রহমান আরও বলেন, “টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে এ আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন এবং মানসিকভাবে যে ট্রমার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন তাদের সবাইকে টেলিমেডিসিন নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে এবং যাদের প্রয়োজন হবে তাদের স্ক্রিনিং করে আমাদের আটটি বিভাগে সাইকো থেরাপি দেওয়া হবে। এ ছাড়া সারা দেশে সকল হাসপাতালে আন্দোলনে আহতদের জন্য শয্যা থাকবে এবং আহতরা ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে সহজেই জানতে পারবেন নিকটস্থ কোন হাসপাতালে শয্যা খালি আছে। তবে যারা আহত হয়েছেন তাদের বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসতে হবে। এজন্য নিটোর, পঙ্গু হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতালসহ ঢাকার বিশেষায়িত সবগুলো হাসপাতালকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকারি হাসপাতাল এমনকি বেসরকারি হাসপাতালে যে সকল বিশেষায়িত সেবা আছে সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে আহত যোদ্ধাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে। যদি কোনো চিকিৎসা দেশে না থাকে এবং বিজ্ঞানসম্মত সম্মতভাবে চিকিৎসক বোর্ড দ্বারা রিকমেন্ড করা হয় তাদের বিদেশের যেখানে চিকিৎসাটা আছে, সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। আমরা আশা করি, আগামী ডিসেম্বরের ভেতর এগুলো সব দৃশ্যমান হবে।”