বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ই-রিটার্ন পরিশোধের খরচ কমানো হয়েছে। এখন থেকে কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে আয়কর পরিশোধ করলে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেনে গ্রাহকদের কাছ থেকে লেনদেন প্রতি ২০ টাকা এবং ২৫ হাজার টাকার বেশি হলে লেনদেন প্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা আদায় করা যাবে। এ ছাড়া এমএফএস অথবা পিএসপি ওয়ালেট ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন হলে গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া যাবে লেনদেন প্রতি ১ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। এই মাশুলের মধ্যেই মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অন্তর্ভুক্ত।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) দেশের সব ব্যাংক, মোবাইলে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) এবং লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর (পিএসপি) উদ্দেশে এ–সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং বিকাশ, নগদ বা রকেটের মতো এমএফএস সেবা অথবা ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধ করলে খরচ এখন থেকে কমবে।
কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও এমএফএস/পিএসপির মাধ্যমে আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রে বেশি হারে মাশুল (ফি) কেটে রাখা হচ্ছে জানিয়ে ২৭ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে এ মাশুল কমানোর পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এর ১৭ দিন পর আজ নির্দেশনাটি জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধের মাশুল হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২১ সালের অক্টোবরে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এত দিন ১ দশমিক ৬ শতাংশ টাকা কেটে রাখা হচ্ছিল।
এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়, এত বেশি হার থাকার কারণে ইলেকট্রনিক পদ্ধতির রিটার্নে (ই-রিটার্ন) আয়কর পরিশোধ কার্যক্রম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। অনলাইনে আয়কর পরিশোধের মাশুল হতে পারে সর্বোচ্চ ২০ টাকা।
সম্প্রতি ৪ সিটি করপোরেশনে অবস্থিত সরকারি কর্মচারী, সারা দেশের তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা, মোবাইল কোম্পানির কর্মকর্তা এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ম্যারিকো, বার্জার পেইন্টস, বাটা শু কোম্পানি ও নেসলের কর্মীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে এনবিআর। কোনো সমস্যায় পড়লে এনবিআরের কল সেন্টারের সহায়তা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চালু থাকা কল সেন্টারের নম্বর ০৯৬৪৩৭১৭১৭১। অনলাইনে দাখিল করা রিটার্নের কপি, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র, আয়কর সনদ, টিআইএন ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারবেন করদাতারা।
এনবিআরের তথ্যমতে, ৫১ কোটি টাকা খরচ করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার পদ্ধতি ২০১৬ সালেই চালু করেছিল এনবিআর। করদাতাদের আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় ২০১৯ সালে সংস্থাটি ওই পদ্ধতি বন্ধ করে দেয়। কোভিড-১৯ চলাকালীন ২০২০ সালের নভেম্বরে এনবিআর নিজের জনবল দিয়ে দুই কোটি টাকা খরচ করে নতুন পদ্ধতি চালু করে। এটিই চলমান।