পুরান ঢাকার চকবাজারে নিজ বাসায় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামকে খুনের ঘটনায় সাবিনা আক্তার (২৫) নামের নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) যশোরের বাঘারপাড়ার মির্জাপুর মধ্যপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, চাকরি না দেওয়া ও পরিচয়সূত্রে সম্পর্ক হলেও বিয়েতে রাজি না হওয়ার জেরে ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) চকবাজারের পোস্তা এলাকার ৬৬১ নম্বর এশিয়া টাওয়ারের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা এবং পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় ব্যবসায়অ নজরুল ইসলামের ( ৪৬) লাশ উদ্ধার করে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। একইদিন চকবাজার মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় ভাই মো. তহিদুল ইসলাম ওরফে তাপস।
পুরান ঢাকার ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাপস ওইদিন বলেছিলেন, গাজীপুরে ব্যবসার মালামাল সন্ত্রাসীরা আটকে রেখেছে বলে সেখানে যাওয়ার কথা বাসার নিরাপত্তাকর্মীদের জানিয়েছিলেন তার ভাই।
ঘটনার আগে শুক্রবার নরসিংদীতে নজরুলের বোনের বাসায় যান তার স্ত্রী ও সন্তানরা। সোমবার থেকে তাকে ফোনে পাচ্ছিল না পরিবার। পরে ঢাকায় ফিরে এসে তার নজরুলের ছেলে সুমিত চাচা তাপসকে নিয়ে চকবাজার ও লালবাগ থানায় গিয়েছিলেন জিডি করতে। জিডি করতে না পেরে রাতে বাসায় ফিরে বাবার লাশ দেখতে পান সুমিত।
মামলার তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাবিনা আক্তারকে শনাক্ত করে পুলিশ।
রোববার দুপুরে মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “গ্রেপ্তার সাবিনা জিজ্ঞাসাবাদে নজরুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার কাছ থেকে নিহত নজরুলের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে।”
মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “ঘটনার প্রায় এক মাস আগে এক ব্যক্তির মাধ্যমে চাকরির জন্য নজরুল ইসলামের সঙ্গে সাবিনার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী-সন্তানরা বাসায় না থাকায় নজরুল ইসলাম ২ ডিসেম্বর রাতে সাবিনাকে ডেকে নেন। সেদিন চাকরি ও বিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে বাক্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ভোর ৫টার দিকে নজরুলকে শিল দিয়ে মাথা ও মুখে গুরুতর আঘাত করেন ও মুখে বালিশ চাপা দেন সাবিনা। নজরুল নিস্তেজ হয়ে পড়লে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে পুরুষাঙ্গ কেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন সাবিনা।”